সারাদিন কাম করি সংসার চলাই। তখন পেটত ভাত জোটে। কিসের ফির মে দিবস অইলা বুঝি না। (সারাদিন কাজ করে সংসার চালাই মে দিবস কি আমরা জানিনা) এমনিভাবে কথা বললেন সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের শাপলা খাতুনসহ অন্যান্য মহিলা শ্রমজিবীরা।
১ মে (বৃহস্পতিবার) দুপুরে উপজেলার উল্লেক্ষিত ইউনিয়নে সরজমিনে দেখা মেলে শ্রমজিবী একদল মহিলার সাথে। তারা জমিতে কাজ করছে। কথা হলে তারা উল্লেক্ষিত কথাগুলো বলেন। তাদের মত এরকম হাজার হাজার শ্রমজিবী মানুষ আছে মহান মে দিবস ও আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস কি তারা জানেনা।
তাদের মতো কয়েকজন নারী সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ি ইউনিয়নের অচিনার ডাঙ্গা এলাকার ফসলের মাঠে কাজ করছিলেন। এদের অনেকের স্বামী নেই।
বাহে, হামার মতো গরিব মানুষের কাজ ছাড়া কোনো উপায় নাই বা অন্য কোনো চিন্তাও নাই। জমিতে কাজ করে খাইতে হয়। কথা হয় সুমতি রায় (৫৬), শাপলা খাতুন (৪৬) ও জয়মনি বালাসহ (৪৯) মোমেনা খাতুন (৩৮) আর দীপালি রাণী (৩৮) ও আরতি বালা (৪৫) এর সাথে। তারা বলেন, সংসারে অভাব অনাটনের কারনে অনেকেই ক্ষেতে ও বাসা বাড়িতে কাজ করছেন। নারী শ্রমিকরা প্রতিদিন কাজ করে পাচ্ছেন ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা করে। আর একই কাজ করে পুরুষ শ্রমিকরা পাচ্ছেন ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা । শ্রমঘন্টা পুরুষের সমান দিলেও তারা কিন্তু বৈষম্যের শিকার।
শ্রমিক মোমেনা খাতুন বলেন, হামরাতো কাজত ফাঁকি দেই না, পুরুষের মতো কাজ করি। তাও হামার টাকা কেনে কম ব্যাহে কনতো। তোমরা পেপারত নেখিবেন হামরা যেন একই টাকা পাই।
সৈয়দপুর শহরে বিসিক শিল্পনগরীসহ অলিগলিতে গড়ে উঠেছে ছোট বড় অনেক শিল্প কল-কারখানা। এসব কল-কারখানায় কাজ করছেন নারী-পুরুষ ও শিশু-কিশোররা। প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থ্কাার কথা থাকলেও তা খোলা রয়েছে চলছে কাজ। সেখানে কর্মরত নারী শ্রমিক সখিনা, নয়নতারা ও সাহেরা বানু আক্ষেপ করে বলেন, মে দিবসে আমাদের কারখানা বন্ধ থাকবে। আমরা সারাদিন আনন্দ করবো। কিন্তু আমাদের কারখানা চলছে। সরকারিভাবে যে শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র আছে, তা আমাদের খোঁজ খবরও রাখেনা। কোন কাজও আসতেছেনা।
সৈয়দপুর শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রের কর্মকর্তার সাথে ফোনে যোগাযোগ করে তাঁকে পাওয়া যায়নি।