০৫:২৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সৈয়দপুরে মরুর প্রাণী দুম্বার খামার, কোরবানি ঘিরে চাহিদা বাড়ার প্রত্যাশা

নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলায় প্রথমবারের মতো গড়ে তোলা হয়েছে মরুভূমির প্রাণী দুম্বার খামার। উপজেলার বোতলাগাড়ি ইউনিয়নের কাথারিপাড়া গ্রামে গড়ে তোলা এ খামারে দুম্বা পালন করা হচ্ছে। আসন্ন পবিত্র কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে এসব প্রাণীর চাহিদা বাড়বে বলে প্রত্যাশা করছেন খামারের মালিক। এরই মধ্যে বিক্রি হয়েছে একটি দুম্বা।

খামারটির মালিক কাথারিপাড়ার বাসিন্দা রবিউল ইসলাম। ২০২২ সালের পর তিনি গড়ে তোলেন ব্যতিক্রমী এই খামার। তাঁর খামারের অধিকাংশ দুম্বাই সাদা রঙের। বড় দুম্বাগুলোর ওজন দাঁড়িয়েছে ৫০ থেকে ১০০ কেজিতে। খামারে মোট ২৭টি দুম্বা ছিল। ঈদ উপলক্ষে একটি বিক্রি হওয়ায় এখন আছে ২৬টি।

রবিউল জানান, খামার থেকে ইতিমধ্যে একটি দুম্বা বিক্রি হয়েছে। সৈয়দপুরের এক ব্যবসায়ী ৯০ হাজার টাকায় এটি কিনেছেন। এ ছাড়া রাজধানী ঢাকা থেকে আরও পাঁচটি দুম্বা বিক্রির অর্ডার পেয়েছেন। বাকিগুলো কোরবানির হাটে তুলবেন। আশা করছেন ঈদের আগেই সব বিক্রি হয়ে যাবে।

আজ খামারে গিয়ে দেখা যায়, ঘাস খাচ্ছে দুম্বাগুলো। দুপুরের পরপর এগুলোকে পাশের মাঠে চরাতে নিয়ে যান খামারের মালিক।

দুম্বাগুলো দেখতে সেখানে ভিড় করেছেন আশপাশের উৎসুক মানুষ। তাঁদের একজন সৈয়দপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী শায়লা খাতুন। তিনি বলেন, মরুর প্রাণী দুম্বা কীভাবে এ দেশের আবহাওয়ায় টিকে আছে, তা দেখার আগ্রহ ছিল। এবারের ঈদে তাঁর পরিবারের দুম্বা কোরবানি দেওয়ার ইচ্ছা আছে।

খামারের মালিক রবিউল ইসলাম জানান, তাঁর ছোট ভাই রেজাউল ইসলাম সৌদি আরবে থাকেন। ২০২২ সালে তিনি দেশে ফেরার সময় দুটি দুম্বা এনেছিলেন।
মরু অঞ্চলের প্রাণীটিকে বাংলাদেশে লালন-পালন করতে গিয়ে প্রথম দিকে বেশ সমস্যায় পড়েন রবিউল। তিনি বলেন, প্রথম প্রথম দুম্বাগুলো বেশ চিৎকার-চেঁচামেচি করত। এ দেশের আবহাওয়ায় খাপ খাওয়াতে সমস্যা হচ্ছিল। পরে মাসখানেকের মধ্যে এ দেশের আবহাওয়া সহ্য হয়। পরের বছর ছোট ভাই আরও ছয়টি দুম্বা নিয়ে দেশে আসেন। তখন খামারে দুম্বার সংখ্যা দাঁড়ায় আটে। দুম্বাগুলো সাধারণত কচি ঘাস খায়। এ ছাড়া ভুট্টা, ভুসি ও চোকর খায়। তবে তুলনামূলকভাবে কম পানি পান করে প্রাণীগুলো।

খামারে দর্শনার্থীদের পাশাপাশি কয়েকজন ক্রেতাও আসেন। তাঁরা প্রতিটি দুম্বার দাম হাঁকেন এক থেকে দেড় লাখ টাকা।

রবিউলের দেখাদেখি দুম্বার খামার গড়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তাঁর প্রতিবেশী ও কলেজশিক্ষার্থী জহুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমি প্রতিদিন রবিউল ভাইয়ের দুম্বার খামার দেখতে আসি, নিজেও খামার গড়ার অভিজ্ঞতা অর্জন করছি। রবিউল ভাই এ ব্যাপারে সহযোগিতা করতে চেয়েছেন।’

এটিকে নীলফামারীর একমাত্র দুম্বার খামার উল্লেখ করে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমি সৈয়দপুরে দুম্বার খামারটি পরিদর্শন করেছি। এটি ভালো উদ্যোগ। তুর্কি জাতের এসব দুম্বা এলাকায় বেশ সাড়া ফেলেছে। এ বিষয়ে খামারিকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।’

জনপ্রিয় সংবাদ

ঈদের আগেই মুক্তি পেল ‘বোহেমিয়ান ঘোড়া’

সৈয়দপুরে মরুর প্রাণী দুম্বার খামার, কোরবানি ঘিরে চাহিদা বাড়ার প্রত্যাশা

প্রকাশিত ০১:১৮:৫৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫

নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলায় প্রথমবারের মতো গড়ে তোলা হয়েছে মরুভূমির প্রাণী দুম্বার খামার। উপজেলার বোতলাগাড়ি ইউনিয়নের কাথারিপাড়া গ্রামে গড়ে তোলা এ খামারে দুম্বা পালন করা হচ্ছে। আসন্ন পবিত্র কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে এসব প্রাণীর চাহিদা বাড়বে বলে প্রত্যাশা করছেন খামারের মালিক। এরই মধ্যে বিক্রি হয়েছে একটি দুম্বা।

খামারটির মালিক কাথারিপাড়ার বাসিন্দা রবিউল ইসলাম। ২০২২ সালের পর তিনি গড়ে তোলেন ব্যতিক্রমী এই খামার। তাঁর খামারের অধিকাংশ দুম্বাই সাদা রঙের। বড় দুম্বাগুলোর ওজন দাঁড়িয়েছে ৫০ থেকে ১০০ কেজিতে। খামারে মোট ২৭টি দুম্বা ছিল। ঈদ উপলক্ষে একটি বিক্রি হওয়ায় এখন আছে ২৬টি।

রবিউল জানান, খামার থেকে ইতিমধ্যে একটি দুম্বা বিক্রি হয়েছে। সৈয়দপুরের এক ব্যবসায়ী ৯০ হাজার টাকায় এটি কিনেছেন। এ ছাড়া রাজধানী ঢাকা থেকে আরও পাঁচটি দুম্বা বিক্রির অর্ডার পেয়েছেন। বাকিগুলো কোরবানির হাটে তুলবেন। আশা করছেন ঈদের আগেই সব বিক্রি হয়ে যাবে।

আজ খামারে গিয়ে দেখা যায়, ঘাস খাচ্ছে দুম্বাগুলো। দুপুরের পরপর এগুলোকে পাশের মাঠে চরাতে নিয়ে যান খামারের মালিক।

দুম্বাগুলো দেখতে সেখানে ভিড় করেছেন আশপাশের উৎসুক মানুষ। তাঁদের একজন সৈয়দপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী শায়লা খাতুন। তিনি বলেন, মরুর প্রাণী দুম্বা কীভাবে এ দেশের আবহাওয়ায় টিকে আছে, তা দেখার আগ্রহ ছিল। এবারের ঈদে তাঁর পরিবারের দুম্বা কোরবানি দেওয়ার ইচ্ছা আছে।

খামারের মালিক রবিউল ইসলাম জানান, তাঁর ছোট ভাই রেজাউল ইসলাম সৌদি আরবে থাকেন। ২০২২ সালে তিনি দেশে ফেরার সময় দুটি দুম্বা এনেছিলেন।
মরু অঞ্চলের প্রাণীটিকে বাংলাদেশে লালন-পালন করতে গিয়ে প্রথম দিকে বেশ সমস্যায় পড়েন রবিউল। তিনি বলেন, প্রথম প্রথম দুম্বাগুলো বেশ চিৎকার-চেঁচামেচি করত। এ দেশের আবহাওয়ায় খাপ খাওয়াতে সমস্যা হচ্ছিল। পরে মাসখানেকের মধ্যে এ দেশের আবহাওয়া সহ্য হয়। পরের বছর ছোট ভাই আরও ছয়টি দুম্বা নিয়ে দেশে আসেন। তখন খামারে দুম্বার সংখ্যা দাঁড়ায় আটে। দুম্বাগুলো সাধারণত কচি ঘাস খায়। এ ছাড়া ভুট্টা, ভুসি ও চোকর খায়। তবে তুলনামূলকভাবে কম পানি পান করে প্রাণীগুলো।

খামারে দর্শনার্থীদের পাশাপাশি কয়েকজন ক্রেতাও আসেন। তাঁরা প্রতিটি দুম্বার দাম হাঁকেন এক থেকে দেড় লাখ টাকা।

রবিউলের দেখাদেখি দুম্বার খামার গড়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তাঁর প্রতিবেশী ও কলেজশিক্ষার্থী জহুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমি প্রতিদিন রবিউল ভাইয়ের দুম্বার খামার দেখতে আসি, নিজেও খামার গড়ার অভিজ্ঞতা অর্জন করছি। রবিউল ভাই এ ব্যাপারে সহযোগিতা করতে চেয়েছেন।’

এটিকে নীলফামারীর একমাত্র দুম্বার খামার উল্লেখ করে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমি সৈয়দপুরে দুম্বার খামারটি পরিদর্শন করেছি। এটি ভালো উদ্যোগ। তুর্কি জাতের এসব দুম্বা এলাকায় বেশ সাড়া ফেলেছে। এ বিষয়ে খামারিকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।’