নীলফামারির জলঢাকায বগুলাগাড়ী স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন প্রধান শিক্ষিকা ও অধ্যক্ষ মোসাম্মৎ মনোয়ারা বেগম।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিকেলে উপজেলা জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন, প্রতিষ্ঠানটির ল্যাব এসিস্টেন নিহাদ সুলতানা ও অফিস সহকারী লায়লা আক্তার। সাংবাদিক সম্মেলনে মোছাঃ মনোয়ারা বেগম বলেন, আমি বগুলাগাড়ি স্কুল এন্ড কলেজে দীর্ঘদিন যাবৎ সততা ও নিষ্ঠার সহিত প্রধান শিক্ষকের দ্বায়িত্ব পালন করে আসছি।
সম্প্রতি আমার বগুলাগাড়ি স্কুল এন্ড কলেজের গুটি কয়েক শিক্ষক ফেসিস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের ক্ষমতা প্রয়োগের মাধ্যমে নাম স্বর্বস্ব ও অতথ্য সম্পূর্ণ আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনার সুত্রপাত ঘটিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির সুনাম ক্ষুন্নিবৃত্তি করাসহ আমার ব্যক্তিগত সম্মান নষ্ট করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
বিগত ২০২৪ সালের শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণের টাকা উত্তোলনের দ্বায়িত্ব দেই সহকারী শিক্ষক মিজানুর রহমানকে। টাকা জমা হওয়ার পর ব্যাংক ড্রাফট করার জন্য শিক্ষক মিজানুর রহমানের নিকট টাকা চাইলে তিনি সহকারী প্রধান শিক্ষককে সমস্ত টাকা বুঝিয়ে দিয়েছে জানান। সহকারী প্রধান শিক্ষককের নিকট ফরম পূরণের টাকার হিসাব চাইলে নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে দিবে জানায় এবং ফরম পূরণের টাকা দেয়। ২০২৩ সালের শিক্ষক মিজানুর রহমানকে একই দ্বায়িত্ব দিয়েছিলাম কিন্তূ পরিকল্পিত ভাবে আমাকে বিপদে ফেলার জন্য ৪জন ছাত্রের ফরম পূরণের টাকা গোপন রাখে এবং হিসাব দেয় নাই। পূর্বের অবিশ্বাসী কর্মকান্ডের জন্য আমি নিজেই ড্রাফট করার টাকা নিয়েছি।
তিনি আরো বলেন, আমি ফরম পূরণের টাকা সহকারী প্রধান শিক্ষকের কাছে কেন চাইলাম, এ কারণে সকল শিক্ষককে একজোট করে আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র শুরু। এ ঘটনার পর থেকে সরকারি বিভিন্ন প্রোগ্রাম বাস্তবায়নের জন্য কিন্তূ দুই একজন শিক্ষক ছাড়া কেউ সারা দেয় না বা উপস্থিত হয় না।
গত ৩০শে ডিসেম্বর বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করার জন্য ২৬শে ডিসেম্বর সকল শিক্ষককে প্রতিষ্ঠানে এসে মার্কসীট জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় তাই গত ২৫-১২-২৪ইং রাতে সকল শিক্ষককে ফোন করি। এতে দু’একজন ছাড়া কেউ ফোন ধরে নাই। পরে গত ২৯-১২-২৪ইং সকল শিক্ষক এসে সুপরিকল্পিত ভাবে ২০২৪ সালের নতুন ভর্তি সেশন ফি, অর্ধবার্ষিক, বার্ষিক, নির্বাচনী পরিক্ষা ও ফরম পূরণ এসএসসি/২০২৪ইং এর ৬ষ্ট,৮ম ও ৯ম শ্রেণির রেজিষ্ট্রেশনের হিসাব আমার কাছে চায়। তিনি বলেন, এ সময় তাদের আমি জানাই যে, এগুলো হিসাব তো আপনাদের কাছেই।
আপনারা হিসাব দিলেই আমি আপনাদের হিসাব দিতে পারবো। এ কথা শুনার পর তারা সকলেই একত্রিত হয়ে অফিস সহকারী লায়লা আক্তারকে গলা ধাক্কা দিয়ে আমার রুম থেকে বের করে দেয় এবং আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে পরিকল্পিত ভাবে দফায় দফায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাংবাদিক পাঠিয়ে বিব্রত পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। শুধু তাই করে এ ঘটনার পর তারা জোরপূর্বক আমাকে কক্ষের ভিতরে রেখে বাহির থেকে তালাবদ্ধ করে রাখেন এবং হিসাব না দেওয়া পর্যন্ত তালা খুলবে মর্মে জানান।
তিনি বলেন, তৎক্ষনাৎ আমি সার্বিক বিষয়াদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয়কে অবগত করি এবং ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তালাবদ্ধ কক্ষ থেকে আমাকে উদ্ধার পূর্বক বাড়ি নিয়ে আসেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ময়নুল ইসলাম। পরবর্তীতে এ অনাকাঙ্খিত ঘটনার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয়ের দিকনির্দেশনায় শিক্ষকদের সমন্বয়ে একটি মিটিং আহবান করা হয় এবং ২০২৫ সালের পূর্ণ ভর্তির টাকা প্রতিষ্ঠানের একাউন্টে জমা দেওয়ার জন্য বলেন। কিন্তূ সেশন ফির দ্বায়িত্বরত শিক্ষক প্রতিষ্ঠানের একাউন্টে এখনো টাকা জমা করেন নাই।
তিনি বলেন, গত ২৯-১২-২৪ইং তারিখ হইতে অধ্যাবদী সময় পর্যন্ত শিক্ষকদয় কোন নোটিশ খাতায় স্বাক্ষর করে নাই। স্বাক্ষর চাইলে স্বাক্ষর না দিয়ে নেটিশ খাতা ছিড়ে ছুরে ফেলে দেন এবং পিয়ন পিয়াংঙ্কাকে জানান ভবিষ্যতে শিক্ষক নোটিশ খাতা স্বাক্ষর করার জন্য নিয়ে আসলে পরিণতি খারাপ হবে। সেই সঙ্গে ২৯-০৪-২৫ইং তারিখে এডহক কমিটির পরিচয় তি সভার নোটিশ প্রকাশ করলে শিক্ষকরা সহি স্বাক্ষর করে নাই এমনকি পরিচিত সভা বাস্তবায়নের জন্য ছাত্রছাত্রীদের নোটিশ করলে সে নোটিশ বিষয়ে শিক্ষক আব্দুল হাই মাষ্টার বলেন, এ নোটিশ প্রকাশ করতে দেওয়া হবে না। এ নোটিশ সহকারী প্রধান শিক্ষককের নিকট রাখেন। এছাড়া বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন উসকানি মুকল কথা শিখিয়ে দিয়ে সাংবাদিক নিয়ে এসে বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে আসছেন।
তিনি বলেন, সহকারী প্রধান শিক্ষক মহুবর রহমান তার আপন বড় ভাই গোলমুন্ডা ইউনিয়ন আওয়ামিলীগ সভাপতি মমিনুর রহমান ও বগুলাগাড়ি স্কুল এন্ড কলেজের তৎকালীন গভার্নিং বডির সভাপতি এ.কে আজাদ এর দলিয় ক্ষমতার বলয়ে ও প্রভাব খাটিয়ে বগুলাগাড়ি স্কুল এন্ড কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ বাগিয়ে নেয় এবং কর্মদিবস শুরুর পর থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র মুলক অপপ্রচার ও বিদ্বেষীত মনোভাবে প্রতিষ্ঠানটি ধ্বংস করতে বিভিন্ন তৎপর কার্যক্রম অব্যহত রেখেছেন।
তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক হয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়ে এমন অসদাচার ও ষড়যন্ত্র মুলক কর্মকান্ড আমাদের যেমন হেয়পতিপন্ন করেছে তেমনি প্রতিষ্ঠানিক সম্মান ক্ষুন্ন হচ্ছে।
আমি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছি বারবার, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণরূপী মিথ্যা ভিত্তিহীন ও বানোয়ান।