১০:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ০২ জুন ২০২৫, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সনাক, নীলফামারী (টিআইবি)

বিশ্বব্যাপী প্লাষ্টিক দূষণের বিরুপ প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে নীলফামারীতে মানববন্ধন

বিশ্বব্যাপী প্লাষ্টিক দূষণের বিরূপ প্রভাব সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়াতে এবং পরিবেশবান্ধব বিকল্প ব্যবহারে উৎসাহ দিতে নীলফামারীতে মানববন্ধন করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)—এর অনুপ্রেরণায় গঠিত সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক)। 

মানববন্ধনে সনাক, ইয়ুথ এনগেজমেন্ট এন্ড সাপোর্ট (ইয়েস) গ্রুপ ও একটিভ সিটিজেন্স গ্রুপ (এসিজি)—এর সদস্যরাসহ বিভিন্ন শ্রেণি—পেশার মানুষ, শিক্ষার্থী, স্বেচ্ছাসেবক, পরিবেশবাদী সংগঠনের প্রতিনিধি এবং ডেমোক্রেসি ওয়াচ, ইউএসএস, ওয়ার্ল্ড ভিশন, বন্ধুসভা, দীপ্তমান যুব সংগঠন, ও স্থানীয় নাগরিক সমাজের সদস্যবৃন্দ অংশগ্রহণপূর্বক সংহতি প্রকাশ করেন।

রবিবার (১ জুন ২০২৫) সকালে জেলা শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে ঘন্টাব্যাপী চলমান মানববন্ধন কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন সনাক সভাপতি মো. আকতারুল আলম। তিনি প্লাষ্টিকের ক্ষতিকর দিক তুলে ধরে তা বন্ধে কার্যকর নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের দাবি জানান। তিনি আরো বলেন, “প্লাষ্টিক দূষণের বিরুদ্ধে টিআইবি—সনাক এর এই উদ্যোগ একদিনের নয়, বরং এটি একটি চলমান আন্দোলনের অংশ। আমরা বিশ্বাস করি, নাগরিক সচেতনতা এবং সরকারি—বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে এই সমস্যা মোকাবেলা সম্ভব।”

এছাড়া মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা উদায়ঙ্গুর সেবা সংস্থা (ইউএসএস) এর প্রোজেক্ট কোঅর্ডিনেটর সালমা আক্তার ও প্রোগ্রাম এক্সিকিউটিভ মো. আব্দুর রউফ, ডেমোক্রেসি ওয়াচ এর সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার নাদিয়া আক্তার, ওয়ার্ল্ড ভিশন এর প্রোগ্রাম অফিসার প্রশান্ত বসকে, নীলফামারী জেলা পরিবেশ দূষণ ও সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি এবং দীপ্তমান যুব সংগঠন এর সভাপতি মো. আব্দুল মমিন, সনাক সদস্য মো. মিজানুর রহমান লিটু, এসিজি সহসমন্বয়ক রুবি বানু ও ইয়েস সহদলনেতা কুমারী বৃষ্টি রানী রায় সহ প্রমূখ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, “প্রতিদিন যে হারে প্লাষ্টিক বর্জ্য উৎপন্ন হচ্ছে তা পরিবেশ, জলজ জীবন এবং মানবস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখনই যদি এর বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে একটি ভয়াবহ পৃথিবী উপহার দিতে হবে।”

এই কর্মসূচির মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীরা ‘প্লাস্টিক দূষণ প্রতিরোধে সকলে, একসাথে, এখনই’, ‘প্লাষ্টিক দূষণ আর নয়, বন্ধ করার এখনই সময়’ ইত্যাদি স্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন। মানববন্ধন শেষে সনাক—টিআইবি এর ১৪টি সুপারিশ উত্থাপন করা হয়, সেগুলো হলো:

 

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে আইএনসিতে উত্থাপনের জন্য সুপারিশ: বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল কতৃর্ক উত্থাপনের জন্য বিষয়সমূহ:

১. প্লাস্টিক দূষণ রোধ—সংক্রান্ত চুক্তিটি দ্রুততার সাথে সম্পাদন করতে হবে। এক্ষেত্রে, জীবাশ্ম জ্বালানি খাতে স্বার্থের দ্বন্দ্ব—সংশ্লিষ্টদের বাদ দিয়ে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া নিশ্চিতের জোরালো দাবি উত্থাপন করতে হবে। এজন্য, বাংলাদেশসহ সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনকে একত্রে কাজ করতে হবে;

২.  চুক্তির আওতায় ২০৪০ সালের মধ্যে প্লাস্টিক তৈরিতে ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহার নিষিদ্ধ এবং উৎপাদিত প্লাস্টিক বর্জে্যর শতভাগ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের দাবি উত্থাপন করতে হবে;

৩.  প্লাস্টিক দূষণ রোধ—সংক্রান্ত চুক্তির আওতায় দেশগুলোকে প্লাস্টিক উৎস থেকে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের তথ্য স্বচ্ছতার সাথে নিরূপণ করতে হবে। সেই তথ্যর ভিত্তিতে এনডিসি’র তথ্য হালনাগাদ ও সংশোধন করে উপস্থাপনের দাবি উত্থাপন করতে হবে;  

৪.  চুক্তির আওতায় “দূষণকারী কতৃর্ক ক্ষতিপূরণ প্রদানের নীতি” বা Polluter-pays principle – এর ভিত্তিতে, প্লাস্টিক উৎপাদনকারীদের অবদান অনুযায়ী দূষণের দায় দূষণকারীকে গ্রহণের বাধ্যবাধকতা আরোপ করতে হবে।

৫.  ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে প্লাস্টিক দূষণমুক্ত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে হবে সেই ঘোষণা ২০২৫ সালের আইএনসি সভা থেকে প্রদান করতে হবে;

৬.  “ন্যাশনাল থ্রিআর স্ট্রাটেজি ফর ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট” কৌশলপত্রটি হালনাগাদ ও সংশোধনসহ পরিবেশ সংক্রান্ত বৈশ্বিক প্রতিশ্রম্নতির আলোকে একটি আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে;

৭.  প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ, পৃথকীকরণ, পুনঃপ্রক্রিয়াজতকরণের ব্যবস্থাসহ একটি আধুনিক ও কার্যকর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতে পরিবেশ অধিদপ্তর, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভাগুলোর কারিগরি ও আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে;

৮.  বর্জ্য ব্যবস্থাপনা—বিষয়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং জনসচেতনতা ও প্রচারণামূলক কার্যক্রম বাস্তবায়নে সরকারি—বেসরকরি প্রতিষ্ঠান, উদ্যোক্তা, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, শিক্ষার্থী এবং তরুণসহ বিভিন্ন শ্রেণী—পেশার মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে;

৯.  প্লাস্টিক শিল্পের জন্য আমদানি শুল্ক বৃদ্ধি ও অন্যান্য প্রণোদনা হ্রাস করে পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণকে উৎসাহিত করতে হবে;

১০. অপ্রাতিষ্ঠানিক প্লাস্টিক পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকারীদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে অন্তর্ভূক্ত করার লক্ষ্যে একটি দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করতে হবে এবং প্লাস্টিক—সংক্রান্ত অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত থেকে পরিবেশ দূষণ হ্রাস করতে হবে;

১১. সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। বিশেষকরে, ‘উৎপাদনকারীর সম্প্রসারিত দায়িত্ব’ সম্পর্কিত নির্দেশিকাটির ব্যপক প্রচারণা নিশ্চিত করতে হবে;

১২. যত্রতত্র প্লাস্টিক ফেলা বন্ধ এবং পরিবেশ দূষণ রোধে সাধারণ জনগণের মধ্যে প্লাস্টিকের নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে;

১৩. নদী, জলাশয় ও পরিবেশের বিভিন্ন উৎসে থাকা প্লাস্টিক বর্জ্য অপসারণসহ পরিবেশ সুরক্ষা কার্যক্রমে নাগরিক উদ্যোগকে উৎসাহিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে;

১৪. প্লাস্টিক দূষণ ও পরিবেশের ক্ষতিসহ এখাত—সংশ্লিষ্ট অনিয়মের সাথে জড়িত প্রতিষ্ঠানকে আইনের আওতায় আনতে হবে।

উল্লেখ্য, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের সুরক্ষায় বিশ্বব্যাপী সচেতনতা সৃষ্টি, অধিপরামর্শ কার্যক্রম এবং এ সংক্রান্ত বহুমুখী উদ্যোগকে উৎসাহিত করতে ১৯৭৩ সাল থেকে প্রতিবছর ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালিত হয়ে আসছে। এ বছর দিবসটি উপলক্ষ্যে টিআইবি দেশব্যাপী ৪৫টি সনাক এলাকায় একযোগে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছে।
জনপ্রিয় সংবাদ

জমে উঠেছে নীলফামারীর ঐতিহ্যবাহী ভবানীগঞ্জ হাট

সনাক, নীলফামারী (টিআইবি)

বিশ্বব্যাপী প্লাষ্টিক দূষণের বিরুপ প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে নীলফামারীতে মানববন্ধন

প্রকাশিত ০১:৩৭:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫

বিশ্বব্যাপী প্লাষ্টিক দূষণের বিরূপ প্রভাব সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়াতে এবং পরিবেশবান্ধব বিকল্প ব্যবহারে উৎসাহ দিতে নীলফামারীতে মানববন্ধন করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)—এর অনুপ্রেরণায় গঠিত সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক)। 

মানববন্ধনে সনাক, ইয়ুথ এনগেজমেন্ট এন্ড সাপোর্ট (ইয়েস) গ্রুপ ও একটিভ সিটিজেন্স গ্রুপ (এসিজি)—এর সদস্যরাসহ বিভিন্ন শ্রেণি—পেশার মানুষ, শিক্ষার্থী, স্বেচ্ছাসেবক, পরিবেশবাদী সংগঠনের প্রতিনিধি এবং ডেমোক্রেসি ওয়াচ, ইউএসএস, ওয়ার্ল্ড ভিশন, বন্ধুসভা, দীপ্তমান যুব সংগঠন, ও স্থানীয় নাগরিক সমাজের সদস্যবৃন্দ অংশগ্রহণপূর্বক সংহতি প্রকাশ করেন।

রবিবার (১ জুন ২০২৫) সকালে জেলা শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে ঘন্টাব্যাপী চলমান মানববন্ধন কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন সনাক সভাপতি মো. আকতারুল আলম। তিনি প্লাষ্টিকের ক্ষতিকর দিক তুলে ধরে তা বন্ধে কার্যকর নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের দাবি জানান। তিনি আরো বলেন, “প্লাষ্টিক দূষণের বিরুদ্ধে টিআইবি—সনাক এর এই উদ্যোগ একদিনের নয়, বরং এটি একটি চলমান আন্দোলনের অংশ। আমরা বিশ্বাস করি, নাগরিক সচেতনতা এবং সরকারি—বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে এই সমস্যা মোকাবেলা সম্ভব।”

এছাড়া মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা উদায়ঙ্গুর সেবা সংস্থা (ইউএসএস) এর প্রোজেক্ট কোঅর্ডিনেটর সালমা আক্তার ও প্রোগ্রাম এক্সিকিউটিভ মো. আব্দুর রউফ, ডেমোক্রেসি ওয়াচ এর সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার নাদিয়া আক্তার, ওয়ার্ল্ড ভিশন এর প্রোগ্রাম অফিসার প্রশান্ত বসকে, নীলফামারী জেলা পরিবেশ দূষণ ও সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি এবং দীপ্তমান যুব সংগঠন এর সভাপতি মো. আব্দুল মমিন, সনাক সদস্য মো. মিজানুর রহমান লিটু, এসিজি সহসমন্বয়ক রুবি বানু ও ইয়েস সহদলনেতা কুমারী বৃষ্টি রানী রায় সহ প্রমূখ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, “প্রতিদিন যে হারে প্লাষ্টিক বর্জ্য উৎপন্ন হচ্ছে তা পরিবেশ, জলজ জীবন এবং মানবস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখনই যদি এর বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে একটি ভয়াবহ পৃথিবী উপহার দিতে হবে।”

এই কর্মসূচির মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীরা ‘প্লাস্টিক দূষণ প্রতিরোধে সকলে, একসাথে, এখনই’, ‘প্লাষ্টিক দূষণ আর নয়, বন্ধ করার এখনই সময়’ ইত্যাদি স্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন। মানববন্ধন শেষে সনাক—টিআইবি এর ১৪টি সুপারিশ উত্থাপন করা হয়, সেগুলো হলো:

 

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে আইএনসিতে উত্থাপনের জন্য সুপারিশ: বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল কতৃর্ক উত্থাপনের জন্য বিষয়সমূহ:

১. প্লাস্টিক দূষণ রোধ—সংক্রান্ত চুক্তিটি দ্রুততার সাথে সম্পাদন করতে হবে। এক্ষেত্রে, জীবাশ্ম জ্বালানি খাতে স্বার্থের দ্বন্দ্ব—সংশ্লিষ্টদের বাদ দিয়ে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া নিশ্চিতের জোরালো দাবি উত্থাপন করতে হবে। এজন্য, বাংলাদেশসহ সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনকে একত্রে কাজ করতে হবে;

২.  চুক্তির আওতায় ২০৪০ সালের মধ্যে প্লাস্টিক তৈরিতে ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহার নিষিদ্ধ এবং উৎপাদিত প্লাস্টিক বর্জে্যর শতভাগ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের দাবি উত্থাপন করতে হবে;

৩.  প্লাস্টিক দূষণ রোধ—সংক্রান্ত চুক্তির আওতায় দেশগুলোকে প্লাস্টিক উৎস থেকে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের তথ্য স্বচ্ছতার সাথে নিরূপণ করতে হবে। সেই তথ্যর ভিত্তিতে এনডিসি’র তথ্য হালনাগাদ ও সংশোধন করে উপস্থাপনের দাবি উত্থাপন করতে হবে;  

৪.  চুক্তির আওতায় “দূষণকারী কতৃর্ক ক্ষতিপূরণ প্রদানের নীতি” বা Polluter-pays principle – এর ভিত্তিতে, প্লাস্টিক উৎপাদনকারীদের অবদান অনুযায়ী দূষণের দায় দূষণকারীকে গ্রহণের বাধ্যবাধকতা আরোপ করতে হবে।

৫.  ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে প্লাস্টিক দূষণমুক্ত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে হবে সেই ঘোষণা ২০২৫ সালের আইএনসি সভা থেকে প্রদান করতে হবে;

৬.  “ন্যাশনাল থ্রিআর স্ট্রাটেজি ফর ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট” কৌশলপত্রটি হালনাগাদ ও সংশোধনসহ পরিবেশ সংক্রান্ত বৈশ্বিক প্রতিশ্রম্নতির আলোকে একটি আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে;

৭.  প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ, পৃথকীকরণ, পুনঃপ্রক্রিয়াজতকরণের ব্যবস্থাসহ একটি আধুনিক ও কার্যকর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতে পরিবেশ অধিদপ্তর, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভাগুলোর কারিগরি ও আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে;

৮.  বর্জ্য ব্যবস্থাপনা—বিষয়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং জনসচেতনতা ও প্রচারণামূলক কার্যক্রম বাস্তবায়নে সরকারি—বেসরকরি প্রতিষ্ঠান, উদ্যোক্তা, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, শিক্ষার্থী এবং তরুণসহ বিভিন্ন শ্রেণী—পেশার মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে;

৯.  প্লাস্টিক শিল্পের জন্য আমদানি শুল্ক বৃদ্ধি ও অন্যান্য প্রণোদনা হ্রাস করে পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণকে উৎসাহিত করতে হবে;

১০. অপ্রাতিষ্ঠানিক প্লাস্টিক পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকারীদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে অন্তর্ভূক্ত করার লক্ষ্যে একটি দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করতে হবে এবং প্লাস্টিক—সংক্রান্ত অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত থেকে পরিবেশ দূষণ হ্রাস করতে হবে;

১১. সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। বিশেষকরে, ‘উৎপাদনকারীর সম্প্রসারিত দায়িত্ব’ সম্পর্কিত নির্দেশিকাটির ব্যপক প্রচারণা নিশ্চিত করতে হবে;

১২. যত্রতত্র প্লাস্টিক ফেলা বন্ধ এবং পরিবেশ দূষণ রোধে সাধারণ জনগণের মধ্যে প্লাস্টিকের নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে;

১৩. নদী, জলাশয় ও পরিবেশের বিভিন্ন উৎসে থাকা প্লাস্টিক বর্জ্য অপসারণসহ পরিবেশ সুরক্ষা কার্যক্রমে নাগরিক উদ্যোগকে উৎসাহিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে;

১৪. প্লাস্টিক দূষণ ও পরিবেশের ক্ষতিসহ এখাত—সংশ্লিষ্ট অনিয়মের সাথে জড়িত প্রতিষ্ঠানকে আইনের আওতায় আনতে হবে।

উল্লেখ্য, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের সুরক্ষায় বিশ্বব্যাপী সচেতনতা সৃষ্টি, অধিপরামর্শ কার্যক্রম এবং এ সংক্রান্ত বহুমুখী উদ্যোগকে উৎসাহিত করতে ১৯৭৩ সাল থেকে প্রতিবছর ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালিত হয়ে আসছে। এ বছর দিবসটি উপলক্ষ্যে টিআইবি দেশব্যাপী ৪৫টি সনাক এলাকায় একযোগে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছে।