প্রথম শ্রেণীর পৌরসভার সিংহভাগ সড়কজুড়ে অসংখ্য খানাখন্দ ও ব্যাপক যানজটে চরম ভোগান্তিতে জনগন। শহরের সড়কগুলোর বেহাল দশায় নাভিশ^াস অবস্থা পৌরবাসির। সেই সাথে মহল্লায় মহল্লায় আবর্জনার স্তুপের কারণে দূষণে দুর্ভোগে নাজেহাল লোকজন। কিন্তু এই সমস্যা সমাধান বা জনদুর্ভোগ লাঘবে যেন কেউ নেই। কর্তৃপক্ষের নির্বিকার ভুমিকায় দিন দিন বেড়েই চলেছে দুঃসহ দুরাবস্থা। সেবা পাওয়া দুরের কথা এতটুকু স্বস্তি নেই নাগরিক জীবনে। দীর্ঘ দিন থেকে এই অসহনীয় পরিস্থিতি বিরাজ করছে নীলফামারীর সৈয়দপুরে।
পৌরসভার প্রধান প্রধান সড়কগুলোর প্রায় সব কয়েকটি ছোট বড় খানাখন্দে ভরপুর। শহরের ৮০ ভাগ সড়কেরই বেহাল দশা। বিশেষ করে ২ টি সড়ক করুণ আকার ধারণ করেছে। এর মধ্যে শেরে বাংলা সড়কের শহরের তামান্না মোড় থেকে ওয়াপদা মোড় পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার এবং শহীদ জহুরুল হক সড়ক হয়ে মিস্ত্রিপাড়া বসুনিয়া মোড় পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার সড়ক একেবারে চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এছাড়াও রেলওয়ে পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে রেলওয়ে কারখানা হয়ে মিস্ত্রিপাড়া পর্যন্ত ১ কিলোমিটার সড়কেরও দুরাবস্থা। এই সড়কগুলোতে বড় বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় পায়ে হেটে চলাও দুরুহ হয়ে পড়েছে। যানবাহন নিয়ে চলতে গেলেই দূর্ঘটনায় পতিত হওয়ার সমুহ আশংকা। এতে যেমন যাত্রীরা আহত হচ্ছেন তেমনি নষ্ট হচ্ছে যানবাহন। দীর্ঘ প্রায় ৫ বছর যাবত এই পরিস্থিতি বিরাজ করলেও দুর্ভোগ লাঘবে কারও কোন উদ্যোগ নেই। ফলে চরম ভোগান্তিতে দিনাতিপাত করছে সৈয়দপুর পৌরবাসী। এছাড়া পাড়া মহল্লার সকল রাস্তাই কার্পেটিং উঠে গিয়েছে।
অন্যদিকে শহরের মধ্যস্থলসহ প্রধান প্রধান মোড়গুলোতে যানজটে নাকাল সাধারণ মানুষ। এর মধ্যে শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়ক, শহীদ জহুরুল হক সড়ক, শেরে বাংলা সড়ক, শহীদ ক্যাপ্টেন মৃধা সামসুল হক সড়ক ( বিমানবন্দর সড়ক), শহীদ তুলশিরাম সড়ক (দিনাজপুর রোড) ও বঙ্গবন্ধু সড়ক (রংপুর রোড) জুড়ে ঘন্টার পর ঘন্টাব্যাপী দীর্ঘ যানজটে দুঃসহ অবস্থায় দিন কাটাতে হচ্ছে সৈয়দপুরবাসীকে। মূলতঃ এই যানজটের কারণ হলো উল্লেখিত সড়কগুলোতে ফুটপাত দখল করে দোকান বসানোসহ অতিরিক্ত চার্জার অটোরিক্সা চলাচল এবং দিনের বেলা ভারি যানবাহন শহরে প্রবেশ। এসব কারণে জনদুর্ভোগ চললেও পৌর কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ নির্বিকার ভুমিকা পালন করায় জনমনে চরম ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে ওইসব দোকান, অটোরিক্সা ও ভারি যানবাহন থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করার বিনিময়ে নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ফলে দিন দিন এই দূর্ভোগ বেড়েই চলেছে।
এর পাশাপাশি দীর্ঘদিন থেকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম বন্ধ থাকায় মহল্লায় মহল্লায় আবর্জনার স্তুপ জমেছে। সেই সাথে ড্রেনে ময়লা আবর্জনা জমে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। এতে যেমন শহরজুড়ে দূর্গন্ধময় ময়লার ভাড়ার গড়ে উঠেছে তেমনি সামান্য বৃষ্টিতেই ড্রেনের পানি উপচে রাস্তাসহ বাসা বাড়ি ও দোকানে ঢুকে পড়ছে। এমনকি মাত্র আধাঘন্টার লাগাতার বৃষ্টির ফলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। যা ঘন্টার পর ঘন্টা বিরাজ করছে। আর আবর্জনার দূর্গন্ধে পরিবেশের ব্যাপক দূষণ ঘটছে। আর এতে মশা ও মাছির উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব কারণে জনজীবনে নাভিশ্বাস অবস্থা দেখা দিয়েছে। যার ফলে প্রথম শ্রেণীর এই পৌরসভা এখন বসবাস অযোগ্য হওয়ার পথে।
এসব বিষয়ে কথা হয় সৈয়দপুর উপজেলার নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক মোঃ নুর ই আলম সিদ্দিকীর সাথে। তিনি বলেন, যানজট নিরসনে ইতোমধ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করো হয়েছে। শহরের অংশীজনদের সাথে মতবিনিময়ের মাধ্যমে যেসব বিষয় উঠে এসেছে তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছি। আশা করা যায় সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এ সমস্যা দূর করতে আমরা সফল হবো।