বৈশাখের শুরুতেই তীব্র তাপদাহে অসহ্য গরমে অতিষ্ঠ দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। চলমান তীব্র তাপদাহ আর কড়া রোদ এবং অনাবৃষ্টির কারণে মাঠে রোদে পুড়ে কৃষকের বিভিন্ন ফসল নষ্ট হচ্ছে। আম-লিচুর গুটি ঝরে পড়ছে। এছাড়াও এ তীব্র গরমে ধান-পাটসহ কৃষির ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। তীব্র দাবদাহ থেকে পরিত্রাণের জন্য এবং বৃষ্টির প্রত্যাশা করে মহান সৃষ্টিকর্তার নিকট পানাহ চেয়ে গতকাল ২৭ এপ্রিল শনিবার সকাল সাড়ে ৬টায় উপজেলার ঐতিহ্যবাহী রানীরবন্দর ইয়াতিমখানা ঈদগাহ মাঠে খোলা আকাশের নিচে ইস্তিসকার নামাজ আদায় করেছেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লীরা। স্থানীয়রা এ নামাজ ও মোনাজাতের আয়োজন করেন। নামাজ শেষে অনাবৃষ্টি ও খরা থেকে পরিত্রাণ পেতে মহান আল্লাহর নিকট বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নামাজ ও মোনাজাতে নশরতপুর, রানীপুর, সাতনালা, আলোকডিহি, তেঁতুলিয়া, খানসামা উপজেলার গোয়ালডিহি গ্রামের প্রায় ৭ শতাধিক শিক্ষক, ছাত্র, যুবক, বৃদ্ধ, শিশুসহ নানা বয়সী মানুষ অংশ গ্রহণ করেন। তওবাতুন নাসুহা বা একনিষ্ঠ তওবার মাধ্যমে মহান আল্লাহর নিকট রহমতের বৃষ্টি কামনা করে দুই রাকাত নামাজ আদায় করা হয়। এসময় মুসল্লীরা অঝোরে চোখের পানি ছেড়ে মোনাজাত করে তওবার মাধ্যমে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এসময় প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে মুক্তি, ফিলিস্তিন ও বিশ্বের সকল মুসলিমদেরসহ দেশ ও জাতির ক্ষমা ও কল্যাণ কামনা করে প্রার্থনাও করা হয়। নামাজ ও মোনাজাত পরিচালনা করেন শাইখ শফিকুল ইসলাম।
নামাজে অংশগ্রহণকারী স্থানীয় কয়েকজন জানান, দীর্ঘদিন ধরে অনাবৃষ্টির কারণে মানুষ, পশুপাখি, গাছপালাসহ সকলেই কষ্টের মধ্যে আছেন। গরমের তীব্রতায় ঘরে-বাইরে কোথাও শান্তি নেই। সেজন্যই আমরা আল্লাহর রহমতের বৃষ্টির আশায় নামাজ আদায় করতে এখানে সমবেত হয়েছি। আমরা চোখের পানির বিনিময়ে আল্লাহর নিকট রহমতের বৃষ্টি কামনা করেছি। মহান আল্লাহ চাইলে সবকিছুই সম্ভব। আশা করছি আল্লাহ তাঁর বান্দাদের নিরাশ করবেন না।
নামাজে সকলকে অংশগ্রহণ করার জন্য আগে থেকেই মাইকে প্রচার করা হয়েছিল। সকালে সরজমিন ঐতিহ্যবাহী রানীরবন্দর ইয়াতিমখানা ঈদগাহ মাঠে গিয়ে দেখা গেছে-পুরাতন পাঞ্জাবি, শার্ট, টি-শার্ট, লুঙি, গামছা, টুপি পরে জায়নামাজ, গামছা নিয়ে বিভিন্ন বয়সী মানুষ মাঠে উপস্থিত হয়েছেন।