বৃহস্পতিবার , ১১ মে ২০২৩ | ৩রা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ
  3. অর্থনীতি
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আবহাওয়া
  6. ই-পেপার
  7. কৃষি
  8. খেলাধুলা
  9. গল্প ও কবিতা
  10. জাতীয়
  11. জীবনযাপন
  12. ধর্ম
  13. প্রযুক্তি
  14. বাংলাদেশ
  15. বিনোদন

ভুট্টার বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক

প্রতিবেদক
জেলা প্রতিনিধি
মে ১১, ২০২৩ ২:১৩ অপরাহ্ণ

নীলফামারীতে এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে ভূট্টার আবাদ। সেই সঙ্গে ফলন হয়েছে বাম্পার। এখন ছেঁড়া ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক। ফলন ভালো হওয়ায় খুশি তারা। তবে বাজারের দামের ওপর নির্ভর করবে কৃষকের ভাগ্য।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় চলতি মৌসুমে ভূট্টা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২৫ হাজার ১০০ হেক্টর জমি। তবে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আবাদ হয়েছে ২৬ হাজার ৬৫৫ হেক্টর। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৭৬ হাজার ১০০ মেট্রিক টন। তবে বেশি জমি আবাদ হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। জেলায় এযাবৎ শতকরা ৬৫ ভাগ ভূট্টা ছেঁড়া (কর্তন) ও মাড়াই করে ঘরে তুলছে কৃষক।
এরমধ্যে সদরে দুই হাজার ৮২০ হেক্টর, সৈয়দপুরে ৪৬০ হেক্টর, ডোমারে তিন হাজার ৩০০ হেক্টর, ডিমলায় ১৪ হাজার ২৫০ হেক্টর, কিশোরগঞ্জে তিন হাজার ২১৫ হেক্টর ও জলঢাকা উপজেলায় দুই হাজার ৬১০ হেক্টর জমিতে ভূট্টার চাষ হয়েছে।
সদরের রামনগর ইউনিয়নের বাহালীপাড়া গ্রামের কৃষক ইউসুফ আলী জানান, চলতি মৌসুমে ৯০ শতক (তিন বিঘা) জমিতে পাইনিয়র ৫৪, ৯৫ জাতের ভূট্টা চাষ করেছেন। এতে বিঘা প্রতি ফলন হয়েছে ৩০ থেকে ৩২ মন করে। তাঁর তিন বিঘায় ফলন হয়েছে ৯৬ মন। যার বাজার মূল্য ৫৯ হাজার ৫২০ টাকা। ওই তিনবিঘা জমিতে মোট খরচ (হাল চাষ,সার, বীজ, সেচ, মাড়াই) হয়েছে ৩৬ হাজার টাকা। এতে তাঁর লাভ হবে ২৩ হাজার ৫০০ টাকা। কৃষক ইউসুফ আলীর চোখে মুখে এখন হাসির ঝিলিক।
জেলা শহরের নিউ বাবুপাড়ার ভূট্টাচাষি ইসমাইল হোসেন বালু জানান, এবার প্রথমবার পরীক্ষামুলকভাবে এক বিঘা জমিতে পেসিফিক জাতের ভূট্টা লাগিয়েছি। বিঘায় ফলন হয়েছে ৩০ মন। আর একবিঘা জমিতে ভূট্টা ফলাতে খরচ হয়েছে ১২ থেকে ১৩ হাজার টাকা। সেখানে (কাঁচায়) মন প্রতি ৬২০ টাকা দরে বিক্রি করেছি ১৮ হাজার ৬০০ টাকায়। এতে আমার লাভ হয়েছে ৫ হাজার ৬০০ টাকা।
একই মহল্লার কৃষক একরামুল হক বলেন, ‘এবার দুই বিঘা জমি চুক্তি নিয়ে ভূট্টা চাষ করেছি। ফলন ভাল হয়েছে। পর্যাপ্ত বৃষ্টি হলে আরও বেশি ফলন হতো। এবার ভূট্টা চাষে লাভবান হলে আগামীতে আরও বেশী জমিতে আবাদ করবো। শুধু ইসমাইল হোসেন, ইউসুফ আলী ও একরামুল হকই নন, এবার জেলার অধিকাংশ ভূট্টাচাষি ভালো ফলন পেয়ে খুশি।’
সদরের কুচকাটা ইউনিয়নের দোনদরী গ্রামের কৃষক সালেহ্ উদ্দিন বলেন, ‘আমার দেড় বিঘা জমির ভূট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে কাঁচা ভূট্টা বাজারে দাম কিছুটা কম। এখন বিক্রি না করে শুকিয়ে ঘরে রেখে দিতে পারলে আরও বেশি লাভ করতে পারতাম।’
জেলার ডিমলার খগাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের টেপাখড়িবাড়ী গ্রামের কৃষক মোত্তালেব হোসেন জানান, এবার এক একর জমিতে ভূট্টার আবাদ করেন ‘অর্ধেকেরও বেশী জমির ভূট্টা মাড়াই করে ঘরে তুলেছি। এতে প্রায় ৫০ মন ভূট্টা হবে আশা করছি। তুলনামুলকভাবে গতবারের চেয়ে এবার ভূট্টার দ্ধিগুন ফলন হয়েছে। বাজারে দাম ভাল পেলে ভূট্টা চাষে লাভবান হতে পারবো।’
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.আতিক আহমেদ জানান, নীলফামারী সদরে এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ভূট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। এ যাবত শতকরা ৮৫ ভাগ ভূট্টা কাটাই মাড়াই করে কৃষকরা ঘরে তুলেছে। আশা করি, আগামী ১৫-২০ দিনে মধ্যে বাকী ভূট্টা ঘরে তুলতে পারবেন কৃষক। বাজার দর ভাল পেলে কৃষকরা ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক ড. এসএম আবু বকর সাইফুল ইসলাম বলেন, নীলফামারীর মাটি ও আবহাওয়া ভূট্টা চাষের জন্য উপযোগি। এবার ভূট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে, ‘তবে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আবাদ হয়েছে ২৬ হাজার ৬৫৫ হেক্টর। বেশি জমিতে আবাদ ও বাম্পার ফলন হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত শতকরা ৬৫ ভাগ জমির ভূট্টা ঘরে তুলছেন কৃষক। আশা করছি, আবহাওয়া অনুকুলে ও বাজারে ভাল দাম পেলে ভূট্টা বিক্রি করে লাভবান হবেন কৃষকরা।’

সর্বশেষ - নীলফামারী