মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে কনের বাড়িতে চলছিল জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান। আয়োজনের কোন কমতি নেই। মেয়ের বিয়ে উপলক্ষ্যে
পরিবার তাঁদের আত্নীয়-স্বজনদের আমন্ত্রণ জানায়। আত্নীয়-স্বজনরাও কনের বাড়িতে নিমন্ত্রণে এসেছে। বিয়ের অনুষ্ঠানের কার্যাদিও প্রায় শেষ পর্যায়ে। কনেবেশে সাজানো হয় মেয়েকে। কিন্তু এ বিয়েতে বাঁধ সাজে উপজেলা প্রশাসন। বিয়ের অনুষ্ঠানে এসে হাজির হন দিনাজপুরের খানসামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. তাজউদ্দিন। এসময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. তাজউদ্দিনের উপস্থিতি টের পেয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে বর-কনেসহ সকলেই অন্যত্র পালিয়ে যান। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তাজউদ্দিনের হস্তক্ষেপে বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পেল খামারপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে
সদ্য এসএসসি পাশ করা স্কুলছাত্রী (১৭)। এ ঘটনাটি গত ৭ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে উপজেলার খামারপাড়া ইউনিয়নের নেউলা গ্রামের হাজীপাড়ায় ঘটেছে। ওই স্কুলছাত্রী হাজীপাড়ার ছয়ফুল ইসলামের মেয়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই ছাত্রীর সাথে একই উপজেলার ভাবকী ইউনিয়নের কুমড়িয়া গ্রামের আব্দুস সামাদের ছেলে মো. শহিদুল ইসলামের (২২) বিয়ে ঠিক হয়। বিয়ে উপলক্ষে উভয় পরিবার তাঁদের আত্নীয়-স্বজনদের আমন্ত্রণও জানায়। এ বাল্যবিয়ের সংবাদ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তাজউদ্দিন নিজেই কনের বাড়িতে গিয়ে উপস্থিত হন। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে বর-কনেসহ বাড়ির সকলেই অন্যত্র দৌঁড়ে পালিয়ে যান। পরে উভয়পক্ষকে ডেকে নিয়ে বাল্যবিবাহ বন্ধ করে দেয়া হয়।
পরে ইউপি চেয়ারম্যান আবুবক্কর সিদ্দিক চৌধুরী ও ইউপি সদস্য বাবলুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন-২০১৭ অনুযায়ী বাল্যবিবাহ দেয়ার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের নিকট মুচলেকা নেন এবং বাল্যবিবাহ সম্পাদনে সহযোগিতা করার জন্য বরের বড়ভাইকে তিন হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তাজউদ্দীন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে
বলেন, বাল্যবিবাহ সম্পাদন করা বা সম্পাদনে সহযোগিতা করা অপরাধ। তাই বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। আসুন সবাই সচেতন হই, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করি।