নীলফামারীতে গবাদী পশুর খাদ্য নেপিয়ার ঘাস চাষে লাভবান হয়েছেন কৃষক। এই ঘাস চাষ করে একদিকে পশু পালনে খাদ্যের সংকট নিরসন হয়েছে আরেকদিকে বিক্রি করে পরিবারে বাড়তি টাকা উপার্জন হচ্ছে।
কৃষিবিদ জয়নাল আবেদীন জানান,নেপিয়ার ঘাস হল পুর্ব আফ্রিকার দুগ্ধ চাষিদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পশু খাদ্য ফসল। এখন আমাদের দেশেও বিশেষ করে গরু ও মহিষের জন্য অনেক উপকারী খাদ্য। এটির কোন বীজ হয় না। কাটিং রোপন করতে হয়। দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে ফসল কাটা যায়, গবাদী পশুর জন্য পুষ্টিকর ফসল এটি। প্রতি একরে ফলন হয়ে থাকে ৫০ টন পর্যন্ত। নেপিয়ার ঘাস স্থায়ী ফসল। এটি দেখতে অনেকটা আখের মত। লম্বায় প্রায় ১৩ ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে। এ ঘাস একবার রোপন করলে প্রায় ৭/৮ বছর পর্যন্ত এর ফলন পাওয়া যায়।
নীলফামারী জেলার প্রায় প্রত্যেক পরিবার পশু পালন করে থাকে। এছারাও ছোট বড় অনেক গরুর খামার রয়েছে। আগে গরুর খাদ্য ছিল ভূষি,চালের গুড়া,পাতারের ঘাস,খর,ভাতের মার,বাঁশের পাতা,ফিড ছোলাসহ অনেক কিছু। ওসব খাদ্যের দাম বেশী হওয়ায়, পুষ্টিগুন নেপিয়ার ঘাস চাষে ঝুঁকছে কৃষক।নেপিয়ার ঘাস চাষে ব্যয় কম, উৎপাদন হয় সারা বছর। অন্য ফসলের তুলনায় লাভ বেশি। বাজারে চাহিদা অনেক বেশী।
সদরের লক্ষীচাপ ইউনিয়নের চাষি রুবেল সরকার বলেন,আমি ১২ বছর থেকে এ ঘাসের চাষ করে আসছি। এতে কোন লোকসান নেই বরং লাভের পরিমান তিনগুন থাকে। বিক্রি করতেও তেমন অসুবিধা হয় না। ঘাস চাষ করে আমি এখন পরিবার নিয়ে অনেক ভালো আছি।
ডোমার উপজেলার রাজু মিয়া জানান, আমি ১১ বছর থেকে নেপিয়ার ঘাস চাষ করছি। এ বছর ১০ বিঘা জমিতে ঘাস চাষ করছি, ফলন বেশ ভাল হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে খরচ হয়েছে ১৬ হাজার টাকা। সব খরচ বাদ দিয়ে আমার প্রায় ২ লক্ষ টাকা লাভ হবে।
জেলা কৃষি অফিসার ড.আবু বকর সাইফুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, নেপিয়ার ঘাস পশু খাদ্যের জন্য অনেক উপকার। এ ঘাসে অনেক পুষ্টিগুন রয়েছে। আমরা কৃষকদের ঘাস চাষের জন্য অনেক পরামর্শ দিয়ে থাকি। খামারীরা এখন বেশী চাষ করছেন। এ ঘাস চাষ করে কৃষকরা অনেক লাভবান হয়েছে।