নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ সুন্দরখাতা বনিকপাড়া গ্রাম দিয়ে পাশ্ববর্তী উপজেলার মৌজা পাঙ্গা যাওয়া মাটির রাস্তার উপর নির্মিত একটি বক্স কালভার্ট ভাগ্য বদলে দিয়েছে। সেই সাথে দুই পারের হাজারো মানুষের গ্রামীণ জনপদে যোগাযোগের দারুণ এক ব্যবস্থা সূচিত হয়েছে। গত ২০২২-২৩ অর্থ বছরে “উপজেলা শহর (নন মিউনিসিপ্যাল) মাস্টার প্লান ও প্রণয়ন মৌলিক অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প (UTMIDP)” এর অধীনে ৩৮ লক্ষ ৫ শত ৩২ টাকা চুক্তি মূল্য ব্যায়ে কেবিসি কনন্সট্রাকশন লিমিটেড, ট্রিজার ইসল্যান্ড (৪র্থ তলা) দিদির্শ্বরী সার্কুলার রোড শান্তিনগর ঢাকা-১২০৭ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণ কাজ শেষ করে। চলতি বছরের ১লা জানুয়ারি মাসে জনগণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয় এই বক্স কালভার্টটি। এরপর থেকে এ কালভার্টটির সাথে যুক্ত হয়েছে উপজেলার দুটি ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রামের হাজারো মানুষের। এতে উপকারভোগী গ্রামগুলোর মানুষজন অনেক খুশি। এলাকার লোকজন ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বর্ষায় বোরোধান ও ভুট্টা মৌসুমে কাদা পানি ভরে থাকা খালের উপর নির্মিত এ কালভার্ট বদলে দিয়েছে ডিমলা উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ সুন্দরখাতা বনিকপাড়া, মাঝিয়ালির ডাঙ্গা, দক্ষিণ পাড়া ও আংশিক পাশ্ববর্তী ডোমার উপজেলার মৌজা পাঙ্গা ইউনিয়নের পাঙ্গা গ্রামের সংযোগ রাস্তার পাশে বসবাসকারী মানুষের ভাগ্য। কারণ কালভার্টটির উপকারভোগী এ অঞ্চলের মানুষের উপার্জনের প্রধান উৎস হলো কৃষি। বালাপাড়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাহার আলী বলেন, মৌসুমের একাংশ কাঁদা পানিতে ডুবে থাকতো এখানে একটি ব্রীজ বা কালভার্ট এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় দুই ইউনিয়নের মানুষের কৃষি কাজ এবং স্কুল পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রীদের কয়েক কিলোমিটার পথ ঘুরে যেতে হতো। বর্তমানে এই বক্স কালভার্টটি পাল্টে দিয়েছে এলাকার সব শ্রেণির মানুষের ভোগান্তি। স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব রবিউল ইসলাম বলেন, যেখানে প্রায় ৫/৬ মাসেই কাঁদা পানি লেগে থাকতো সেখানে কালভার্ট নির্মাণের ফলে পাশ্ববর্তী উপজেলাসহ দুই ইউনিয়নের যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক উন্নত হলো। স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা সহজেই এই পথে যাতায়াত করতে পারছে এবং এলাকার মানুষের ভোগান্তি দূর হয়েছে। এলাকার আব্দুল আজিজ এর ছেলে মোঃ আছির উদ্দিন (কৃষক) আমাদের চাষাবাদের প্রায় সাতবিঘা আবাদি জমি বিস্তীর্ণভাবে আছে যা দেশ স্বাধীনের পর থেকে ১ ফসলি জমি হিসেবে ব্যবহার উপযোগী ছিল, কালভার্টটি নির্মাণ হওয়ার পর এখন থেকে একাধিক ফসল ফলিয়ে ভ্যান বা ট্রলি যোগে ঘরে তুলতে পারবো। মোঃ আতিয়ার রহমানের ছেলে কৃষক মোঃ রহিদুল ইসলাম জানান, কালবার্টটির দু’দিকে আমার কৃষি জমি আছে, আগে আমরা কাঙ্ক্ষিত চাষাবাদের ফসল অধিক মাত্রায় কাঁদা পানি থাকার কারনে কলাগাছের ভেলায় ভাসিয়ে ফসল সংরক্ষণ করতাম, এখন আর সেই দুঃখ কষ্ট নেই। মৃতঃ আহম্মদ আলী (তুফান) এর ছেলে মোঃ জহুরুল ইসলাম কৃষক ভিষণ আনন্দ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের স্বপ্ন পূরণ করেছে স্থানীয় সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আফতাব উদ্দিন সরকার, এমন প্রত্যন্ত অঞ্চলে রাস্তাসহ একটি আরসিসি বক্স কালভার্ট করে দিবেন ভাবতেও পারিনি। তিনি আরও বলেন, এলাকার মানুষ বর্ষা মৌসুমে পানির মধ্যে দিয়ে পারাপার হতো। আরো একজন কৃষক বলেন, বক্স কালভার্টটি নির্মাণের ফলে বিস্তীর্ণ কৃষি জমিতে কৃষি যন্ত্রপাতি (ট্রাক্টর, হারভেষ্টার) ফলানো ধান, ভুট্টা, আলু,পিঁয়াজ, কাঁচা মরিচ ও পাট কেটে যানবাহন ব্যবস্থায় দুই পাড়ের মানুষের আনা নেয়াও অনেক সহজ হবে।