নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশে নিযুক্ত কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং সিক বলেছেন, শ্রীলংকা যেমন পরিস্থিতিতে পড়েছিল তাতে বাংলাদেশের পড়ার সম্ভাবনা খুব কম। আর সে কারণে শ্রীলংকার মতো ঋণগ্রস্ত হবে না বাংলাদেশ। এই অঞ্চলে কিছু জটিল চ্যালেঞ্জ আছে বলে আমি মনে করি। মালদ্বীপে ‘ইন্ডিয়া আউট’ সাফল্য লাভ করেছে। যার কারণে ভারতীয় সেনা মালদ্বীপ থেকে প্রত্যাহার করা হচ্ছে। চীনের কারনে মালদ্বীপেরও সম্ভাবনা আছে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ার।
সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
রাষ্ট্রদূত এসময় বাংলাদেশের মেগাপ্রকল্পে কোরিয়ার কাজ করার আগ্রহের কথা জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ অনেক সফলতার সঙ্গে অবকাঠামোগত উন্নয়ন করে যাচ্ছে। কোরিয়া বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নেও অংশীদার হতে চায়, যেমনটা আমরা তৈরি পোশাক খাতে করেছি। কোরিয়ার কোম্পানি ইচ্ছাকৃতভাবে কখনই কন প্রকল্প বাস্তবায়নে সময়ক্ষেপন করে না কিংবা খরচ বাড়িয়ে দেয় না এবং সময়মত প্রকল্পের কাজ শেষ করতে অঙ্গীকারবদ্ধ থাকে।
পার্ক ইয়ং সিক বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে কোরিয়ার তৈরি পোশাক খাতের সম্পর্ক অনেক পুরনো। ১৯৭৯ সালে কোরিয়ার দাইয়ু এবং বাংলাদেশের দেশ গার্মেন্টস সম্পর্কের বিজ এখানে স্থাপন করে। তখন থেকেই বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের ক্রমবর্ধমান অগ্রগতি রফতানির ৮৫ শতাংশের বেশি তৈরি পোশাক খাত থেকে আসে। তবে বাংলাদেশের সনাতন পোশাক তৈরির পাশাপাশি আরও নতুনত্ব আনতে হবে। সিনথেটিক পন্যের দিকে বেশি জোর দিতে হবে। তার জন্য অনেক বিনিয়োগ এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োজন আছে, এক্ষেত্রে দুইদেশ একসঙ্গে কাজ করতে পারে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ২০২২ সালে ৩ বিলিয়ন ডলার ছিল যা এযাবৎ কালের রেকর্ড। কিন্তু গত বছর তা কিছুটা কমে যায়। বাংলাদেশে কোরিয়ার বিনিয়োগ পঞ্চম স্থানে। সাম্প্রতিক উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ খাত হচ্ছে অটোমোবাইল, মোবাইল ফোন এবং ইলেক্ট্রনিক্স।’
কোরিয়ায় বাংলাদেশি কর্মীদের প্রশংসায় রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘কোরিয়া বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্য। ইপিএ প্রোগ্রামের আওতায় ২০০৮ থেকে ২০২২ পর্যন্ত ২৮ হাজার ৬৯৭ জন অভিবাসী কর্মী দক্ষিণ কোরিয়ায় গেছেন। এই কর্মীরা কোরিয়ার অর্থনীতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। কোরিয়া থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশি অভিবাসী কর্মীদের অনেক সফলতার গল্প আছে। কোরিয়ার সরকার বাংলদেশে ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টার তৈরিতে সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতবদ্ধ।’