বিশেষ প্রতিনিধি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন সরকার গঠনের পরে তাকে অভিনন্দন জানিয়ে পাঠানো জাতিসংঘের চিঠি নিয়ে বিএনপির সন্দেহে পানি ঢেলে দিয়েছে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র। ব্রিফিংয়ে জানা যায়, যে চিঠি নিয়ে বিএনপি সন্দেহ প্রকাশ করেছে সে চিঠি তারাই পাঠিয়েছেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতিসংঘের মতো সংস্থার চিঠি নিয়ে এ ধরনের সন্দেহ প্রকাশ করে বক্তব্য দিয়ে নিজেদের দৈন্যতা প্রকাশ করেছে বিএনপি। মহাসচিবের চিঠি পাঠানোর কথা স্বীকারের মধ্য দিয়ে বিএনপির রাজনীতি আবারও প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।

টানা চতুর্থ মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়ে গত ১৮ জানুয়ারি চিঠি লেখেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। অথচ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয়ী হওয়া আওয়ামী লীগ সরকারকে স্বাগত জানিয়ে, জাতিসংঘের দেয়া চিঠির সত্যতা নিয়ে ২০ জানুয়ারি প্রশ্ন তোলেন বিএনপি নেতারা। তাদের দাবি, চিঠির ভাষায় নানা অসংঙ্গতি রয়েছে। এসব অসংঙ্গতির জবাব চায় দলটি।

সোমবার (২২ জানুয়ারি) জাতিসংঘের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিককে প্রশ্ন করেন এবং শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়ে জাতিসংঘের দেওয়া চিঠির বিষয়ে জানতে চান। জবাবে স্টিফেন ডুজারিক বলেন, তিনি (জাতিসংঘ মহাসচিব) প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন, যেমনটা বিভিন্ন দেশের সরকারপ্রধান বা রাষ্ট্রপ্রধানরা পুনর্নির্বাচিত হলে মহাসচিব (চিঠি) পাঠিয়ে থাকেন।

জাতিসংঘের মতো একটি সংস্থার চিঠি নিয়ে বাংলাদেশ সরকার মিথ্যাচার করবে এটা ভাবাই বিএনপির রাজনৈতিক দৈন্যতা উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান বলেন, ‘তারা পাবলিক পরিসরে এধরনের দাবি কীভাবে করলো। জাতিসংঘের মতো সংস্থার চিঠি কি ছেলেখেলা, চাইলেই এটা পাওয়া যায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘এধরনের বক্তব্য দেওয়ার জন্য বিএনপি নেতাদের প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া উচিত। মিথ্যা তথ্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অধিকার কোন রাজনৈতিক দলেরই নেই।’ এদিকে নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব) আবদুর রশীদ বলেন, ‘বিএনপি যদি মনে করে জাতিসংঘের চিঠি নিয়ে তাদের সন্দেহ বিষয়ে একটা উড়ো কথা বলবে এবং সেটা জাতিসংঘের নজরে আসবে না সেটা ভুল। ফলে এধরনের অদায়িত্বশীল আচরণের জন্য তাদেরকে মাশুল গুণতে হবে। জনগণের কাছে এখন সব তথ্য অনেক বেশি থাকে। তারা মিথ্যা ও সত্য তথ্য মিলিয়ে দেখার সুযোগ পায়। সেহেতু যা খুশি বক্তব্য না দিয়ে তাদের উচিত গঠনমূলক রাজনীতির পথে আসা।’