টানা চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ৩৭ সদস্যের নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এর মধ্যে ২৫ জনকে পূর্ণমন্ত্রী এবং ১১ জনকে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে বৃহস্পতিবারের শপথ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

এদিন সন্ধ্যা ৭টায় বঙ্গভবনে তাদের শপথ বাক্য পাঠ করাবেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন বুধবার সন্ধ্যায় সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম ঘোষণা করেন।

সর্বশেষ মন্ত্রিসভার সদস্য সংখ্যা ছিল ৪৮ জন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও ছিলেন ২৫ জন মন্ত্রী, ১৯ জন প্রতিমন্ত্রী এবং তিনজন উপমন্ত্রী।

এদের মধ্যে দু’জন টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী এবং একজন টেকনোক্র্যাট প্রতিমন্ত্রী ছিলেন।

এবার সেখানে নতুন মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও ৩৬ মন্ত্রী–প্রতিমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এদের মধ্যে দু’জন টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী রয়েছেন।

তবে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা কে কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেতে যাচ্ছেন, সেটা এখনো নিশ্চিত করে জানানো হয়নি। শপথ গ্রহণের পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানা যাচ্ছে।

নতুন মন্ত্রিসভায় পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে যাদেরকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, তাদের মধ্যে নাম নেই বর্তমান মন্ত্রিসভার বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল, কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এবং পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের।

এছাড়াও বাদ পড়েছেন বর্তমান পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীর, মৎস্য ও প্রাণি সম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ, সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, বন ও জলবায়ু বিষয়কমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈ সিং, রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

এদিকে, নতুন মন্ত্রিসভায় পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে ডাক পেয়েছেন ফারুক খান, আবুল হাসান মাহমুদ আলী, সাবের হোসেন চৌধুরী, মো. আব্দুস শহীদ, র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, মো. আব্দুর রহমান, নারায়ন চন্দ্র চন্দ এবং আব্দুস সালাম।

আরো ডাক পেয়েছেন মহিবুল হাসান চৌধুরী, ফরহাদ হোসেন, ফরিদুল হক খান, জিল্লুল হাকিম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, নামজুল হাসান পাপন এবং সামন্ত লাল সেন।

এদের মধ্যে ফারুক খান আগে বাণিজ্যমন্ত্রী এবং আবুল হাসান মাহমুদ আলী পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

এছাড়া জাহাঙ্গীর কবির নানক স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

আর নাজমুল হাসান পাপন বর্তমানে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

বর্তমান মন্ত্রিসভার জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এবার পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে ডাক পেয়েছেন।

নতুন এই মন্ত্রিসভায় দু’জন টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী থাকছেন। আগের মন্ত্রিসভার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমানের সাথে এবার নতুন যোগ হয়েছেন সামন্ত লাল সেন।

অন্যদিকে, বর্তমান মন্ত্রিসভার প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান বাদ পড়েছেন।

এছাড়াও বাদ পড়েছেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বেগম ফজিলাতুন নেছা এবং পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম।

এদের মধ্যে শামসুল আলম টেকনোক্র্যাট হিসেবে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন। নির্বাচনের আগে মোস্তাফা জব্বার-সহ অন্যান্য টেকনোক্র্যাট মন্ত্রীদের সাথে তিনিও পদত্যাগ করেন।

বর্তমান মন্ত্রিসভার তিনজন প্রতিমন্ত্রী এবারের নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন।

তারা হলেন বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য এবং ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান।

কাজেই এই তিনজনের নামও নেই নতুন মন্ত্রিসভায়।

এছাড়া এবারের নির্বাচনে তিনজন প্রতিমন্ত্রী দলীয় মনোনয়ন পাননি।

তারা হলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন। ফলে তারাও নেই নতুন মন্ত্রিসভায়।

সেখানে নতুন প্রতিমন্ত্রী হচ্ছেন সিমিন হোসেন রিমি, মহিববুর রহমান, মোহাম্মদ আলী আরাফাত, রুমানা আলী, আহসানুল ইসলাম টিটু, শফিকুর রহমান চৌধুরী, কুজেন্দ্রলাল ত্রিপুরা।

আওয়ামী লীগের বর্তমান মন্ত্রিসভার পররাষ্ট্র এবং পরিকল্পনা- এ দু’টি মন্ত্রণালয়েরই মন্ত্রী এবং প্রতিমন্ত্রী উভয়েই নতুন মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়লেন। সূত্র : বিবিসি