পৌষের শেষে এসে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে অনেকটাই তাপমাত্রা বাড়লেও ঘন কুয়াশার দাপট আর হিমশীতল বাতাসের জন্য হাড় কাঁপানো কনকনে শীতে শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষজন পড়েছেন বিপাকে। রাতে বৃষ্টির ফোঁটার মতো ঝরছে কুয়াশা। সকাল ১০টা পর্যন্ত দেখা মিলছে না সূর্যের। ফলে শীতে বিপাকে পড়েছেন সর্বস্তরের মানুষজন।
গতকাল বুধবার (১০ জানয়ারি) সকাল ৯টায় দিনাজপুর জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৭ ডগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আদ্রতা ৯৫ শতাংশ এবং বাতাসের গতি শূন্য নটস।
এদিকে রাত ও দিনে তাপমাত্রা প্রায় কাছাকাছি হওয়ায় দুপুর পর্যন্ত ঠান্ডা বেশি অনুভূত হচ্ছে। এ অবস্থায় শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষজন প্রয়োজনীয় গরম কাপড়ের অভাবে সময় মতো কাজে বের হতে পারছেন না। বেলা বাড়ার সাথে সাথে সূর্যের কিছুটা উত্তাপ ছড়ালেও বিকেল হতেই তাপমাত্রা আবারও নিম্নগামী হতে থাকে।
উপজেলার গোপালপুর গ্রামের শ্রমজীবী সুবাস চন্দ্র রায় বলেন, ঠান্ডায় অবস্থা কাহিল হয়ে পড়েছে। হতে তেমন টাকা পয়সা না থাকায় শীতের পুরনো কাপড় কিনতে পারেননি। খুব কষ্ট করে দিন কাটাতে হচ্ছে।
চকচকা গ্রামের স্বামী পরিত্যক্তা ফজিলা খাতুন (৪৮) বলেন, বাতাস আর ঠান্ডায় হাত-পা বরফ হয়ে যাচ্ছে। গরু ও ছাগল বাইরে বের করতে পারছেন না ঠান্ডায় যদি গবাদিপশুগুলোর রোগ-বালাই হয়। বাতাসে কাবু করে ফেলছে।
উপজেলার কাজিহাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মানিক রতন বলেন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে প্রথম দফায় ২০০ এবং দ্বিতীয় দফায় ১০০ মোট ৩০০ কম্বল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। বরাদ্দের কম্বলগুলো ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডের অসহায় দুস্থদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। এরপর আর কোনো বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। তবে পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
দিনাজপুর আবহাওয়া দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, গত মঙ্গলবারের (৯ জানুয়ারি) চেয়ে গতকাল বুধবার (১০ জানুয়ারি) তাপামাত্রা ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে এসেছে। গতকাল বুধবার (১০ জানুয়ারি) সকাল ৬টায় জেলার সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিল ১১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বাতাসের আদ্রতা ৯৫ শতাংশ এবং বাতাসের গতি শূন্য নটস। একইভাবে সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বাতাসের আদ্রতা ৯৭ শতাংশ এবং বাতাসের গতি ১ নটস। অথচ গত মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) দিনাজপুর জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আদ্রতা ৯৮ শতাংশ এবং বাতাসের গতি ২ নটস।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা মীর মো. আল কামাহ তমাল বলেন, ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকৈ বরাদ্দ পাওয়া ৪ হাজার ১৬০ টি কম্বল ইতোমধ্যেই বিতরণ করা হয়েছে। তবে আরো কম্বলের চাহিদা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে দেওয়া আছে। আশা করা যায় দ্রুতই আরো কিছু কম্বল পাওয়া যাবে। বরাদ্দ আসলেই অসহায় ও দুস্থদের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হবে।