বিশেষ প্রতিনিধি

আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ২৯টি দলের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পরেও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ও সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এটাকে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বলতে চায় না। নির্বাচন নিয়ে তাদের দেওয়া বক্তব্যকে অর্ধসত্য ও একপাক্ষিক বলে মন্তব্য করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আন্তর্জাতিকভাবে নির্বাচনকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করতে তাদের এসব বলার দরকার হচ্ছে। নির্বাচনে বিএনপি ও সমমনা কয়েকটি দল যারা সরকার সরানোর একদফা দাবির আন্দোলন করতে গিয়ে নির্বাচনী ট্রেন মিস করেছে।

তফসিল ঘোষণার আগে ও পরের পরিস্থিতি বিবেচনায় দেশে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বলতে যা বোঝায় তা এবারও হবে না, যা চরম হতাশাজনক বলে বিবৃতি দিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, যে নির্বাচনটা হতে যাচ্ছে, এটা কোনো নির্বাচনই না। নির্বাচনের যে সংজ্ঞা তার মধ্যেই এটা পড়ে না।

অথচ আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে প্রার্থী দিয়েছে ২৯টি রাজনৈতিক দল। মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ২ হাজার ৭১১ জন। তাদের মধ্যে এক হাজার ৯৬৪ জন রাজনৈতিক দল মনোনীত প্রার্থী। বাকি ৭৪৭ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বেশিরভাগই আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হয়ে লড়ছেন। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন সাবেক ও বর্তমান সংসদ সদস্যও রয়েছেন।

প্রার্থীদের পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, এ নির্বাচনে অংশ নেওয়া ১৯টি রাজনৈতিক দল ৫০টির কম আসনে তাদের দলীয় প্রার্থী দিয়েছে। অর্থাৎ ভোটে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলগুলোর ৬৫ শতাংশই এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। গণফোরামের শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশ এ নির্বাচনে অংশ না নিলেও দলটির মনোনয়নে ৯ জন প্রার্থী হয়েছেন।

রবিবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘নির্বাচনকে ঘিরে সারা দেশে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। নির্বাচনে অংশ নেওয়া স্বতন্ত্র প্রার্থীরা আমাদের দলের হলেও তাদেরকে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবেই ভাবতে হবে। আমরা নির্বাচন শান্তিপূর্ণ চাই। নির্বাচনকে নিয়ে কোনো সহিংসতা চাই না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভায়োলেন্স ফ্রি, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চান।’

বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আন্দোলন করে ব্যর্থ হয়ে তাদের এখন আর কী করার আছে। বরং এই নির্বাচন বর্জন করার মধ্য দিয়ে তাদের রাজনীতির পথ আরো সংকুচিত হবে।’

অংশগ্রহণমূলক নয় বলার সময় এখনও আসেনি। যারা তেমনটা বলার চেষ্টা করছেন তারা বিশেষ কোন দলকে সমর্থন দিতে এবং ভোটারদের বিভ্র্রান্ত করতে এমনটা বলছেন উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘নিবন্ধিত অনেক দল অংশ নিচ্ছে, সেদিক থেকে অবশ্যই অংশগ্রহণণমূলক। আমাদের সংবিধান যেটি মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা দিয়েছে সেটা অনুযায়ী, জনগণের উপস্থিতিই অংশগ্রহণমূলক কিনা সেটা নির্ধারণ করবে। সেটার সিদ্ধান্তে আসার সময় এখনও আসেনি। আগামী ৭ জানুয়ারি সাধারণ মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য আসবেন। তার লক্ষণও দেখা যাচ্ছে। মনোনয়ন কেনার সময় থেকে একটা উৎসবমুখর পরিবেশ লক্ষ করা যাচ্ছে।’