নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্বাচন বর্জন ও অসহযোগ আন্দোলনের পক্ষে রাজধানীতে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে জনসাধারণের মাঝে লিফলেট বিতরণ করেন বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। গত তিনদিন তারা গণসংযোগ কর্মসূচি দিয়ে সরকার বিরোধী লিফলেট বিতরণ করে আসছে। তবে এত দায়সারা কর্মসূচি নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে সাধারণ মানুষ। তারা বলছেন, এক মাস ধরে আগুনে মানুষ পুড়িয়ে এখন কিসের গণসংযোগ। তারা নির্বাচনে জিততে পারবে না বলে অংশগ্রহণ করছে না। সেই নির্বাচন বর্জনের জন্য মানুষকে বাধ্য করবে কেনো?

গণসংযোগের নামে গত তিনদিন বিএনপির নেতারা রুটিন করে কয়েকটা এলাকায় প্রধান সড়কের আশেপাশে লিফলেট বিলি করেছে। সেখানে তারা জনগণের উদ্দেশ্যে বলেন- দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাবে বিএনপি। শেষদিন রাজধানীর রামপুরা ও শাহজাহানপুর কাঁচা বাজারে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

গণসংযোগের সময় জনগণ ও ভোটারদের প্রতি ৭ই জানুয়ারির নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি। এসময় বিএনপির এই নেতা বলেন, দেশের মানুষ ও গণতান্ত্রিক বিশ্ব জেনে গেছে শেখ হাসিনা প্রহসনের নির্বাচন করছেন। জনগণ ও ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা আসন্ন ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে কেউ ভোটকেন্দ্রে যাবেন না। অন্যকেও যেতে না বলুন। আপনারা এই নির্বাচন বর্জন করুন।

কোথায় গণসংযোগ উল্লেখ করে রোকেয়া স্মরণির দোকানদার রবিন চৌধুরী বলেন, ‘আমিতো সামনেই আছি। গণসংযোগের কোন বিষয় আমার জানা নেই। টেলিভিশনে জেনেছি গণংযোগের কথা। কিন্তু গত তিনদিনে তেমন কিছু নজরে আসেনি।’

মোহম্মদপুরের টাউনহলের পিছনের এলাকার দোকানগুলোতে জিজ্ঞেস করা হলে তারা বলেন, ‘গণসংযোগ বিষয়ে তাদের কাছে কেউ আসনি।’ হাওলাদার বলেন, ‘বিএনপির এটা পুরোনো অভ্যাস। অবরোধ হরতাল ডেকে মানুষ আগুনে পুড়িয়ে দিচ্ছে, কিন্তু আন্দোলনের মাঠে তারা কেউ নেই। লিফলেট দিয়ে কী আন্দোলন করে।’

রাজধানীর বেশিরভাগ এলাকার মানুষ এই গণসংযোগ বিষয়ে কিছু জানেন না এবং টেলিভিশনে যতটুকু দেখেছেন ততটুকুই তথ্য তাদের কাছে আছে বলে জানান। মহাখালী বাসস্ট্যান্ডের কাছে এক ফলবিক্রেতাকে জিজ্ঞেস করা হয় আজ কি অবরোধ? তিনি বলেন, ‘হলে হতেও পারে। অবরোধ আর অন্যদিনে কোন পার্থক্য নাই। কেউ লিফলেট নিয়ে এসেছিলো কিনা প্রশ্নের জবাবে বলে, দুরে দেখেছি, আমার কাছে আসেনি।’

এদিকে নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান শনিবার সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য লিফলেট বিতরণ হচ্ছে- এমনটা চোখে পড়লেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘কাউকে কোনো রকম ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। বড়-ছোট সবাইকে একইভাবে দেখছি। সেক্ষেত্রে আমরা নিরপেক্ষ অবস্থান নেওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মাঠে নিরপেক্ষ অবস্থান আছে। কোনো শঙ্কা, ভয়ভীতি বা আনুকূল্য নেই। আমরা চরম নিরপেক্ষ বলে কেউ রেহাই পাবে না।’