নিজস্ব প্রতিবেদক
দ্বিতীয় দ্রুততর বর্ধিত অর্থনীতির দেশ হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। মাস্টারকার্ড ইকোনমিক ইন্সটিটিউট তাদের ২০২৪ সালের অর্থনীতির পূর্বাভাসে এতথ্য প্রকাশ করেছে। সেখানে ৪৬ টি দেশের মাইক্রো ও ম্যাক্রো ডাটা পর্যালোচনা করে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তাদের পূর্বাভাস অনুযায়ী বাংলাদেশের ২০২৪ আসর জিডিপি প্রবৃদ্ধি দাঁড়াবে ৬.৩%, আর ১ম স্থানে থাকা ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধি দাঁড়াবে ৬.৪%।
মাস্টারকার্ড ইকোনমিক্স ইনস্টিটিউট অনুসারে, ২০২৪ সালে একটি নতুন অধ্যায় উন্মোচিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ভোক্তা এবং কর্পোরেশনগুলি মাঝে মাঝে, ব্যয় এবং বিনিয়োগ সম্পর্কে কঠিন সিদ্ধান্তের সম্মুখীন হবে৷ প্রাক-মহামারী প্রবণতার তুলনায় সুদের হার, মজুরি এবং দাম বেশি থাকায়, অনেকেই সাবধানে বিনিয়োগকে অগ্রাধিকার দেব।
২০২৪ সালে বেশিরভাগ অর্থনীতিতে মুদ্রাস্ফীতির চাপ কমিয়ে ফেলতে সক্ষম হবে। সংস্থাটি আশা করছে বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতি (ভোক্তা মূল্য সূচক) ২০২৩ সালে ৬.০% থেকে কমে ২০২৪ সালে ৪.৯% হবে। যদিও মুদ্রাস্ফীতি কম হবে, তবুও এটি প্রাক-মহামারীতে যেই ২.৭% ছিল, তার নিচে আর নামা সম্ভব হবে না। মুদ্রাস্ফীতি বাদে, ২০২৪-এ “বাস্তব” প্রবৃদ্ধি ২০২৩-এর মতো অনুভূত হতে পারে। ২০২৩ সালে ৩.০%-এর তুলনায় ২০২৪ সালে প্রকৃত বৈশ্বিক GDP বৃদ্ধি ২.৯% এর বেশি হবে।
শ্রমবাজারে মজুরি বৃদ্ধির কারণে ভোক্তাদের ব্যয় করার সক্ষমতা বাড়বে। মূল্যস্ফীতি যেহেতু স্থিতিশীল হতে যাচ্ছে, তাই ক্রয়ক্ষমতা বাড়বে। যদিও এমইআই বিশ্বাস করে যে বৈশ্বিক অর্থনীতি ২০২৪ সালে আগের তিন বছরের তুলনায় আরও “স্বাভাবিক” বোধ করবে, এটি এখনও পুনঃভারসাম্য প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যাবে। এর অর্থ হল ভোক্তা এবং কর্পোরেশনগুলি আপেক্ষিক মূল্যের পার্থক্য এবং উচ্চতর ঋণের খরচ পরিবর্তনের পরিবেশে কীভাবে তাদের ব্যয় এবং বিনিয়োগকে অগ্রাধিকার দিতে হবে সে সম্পর্কে সচেতন থাকবে।
এমইআইয়ের মতে ২০২৪ সালের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ভারতে ৬.৪ শতাংশ, বাংলাদেশ ৬.৩ শতাংশ, ভিয়েতনাম ৬.২ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়া ৫.১ শতাংশ, চীন ৪.৬ শতাংশ, মালয়েশিয়া ৪.৫ শতাংশ, আরব আমিরাত ৪ শতাংশ, সৌদি আরব ৩.৫ শতাংশ, থাইল্যান্ড ৩.৪ শতাংশ এবং পোল্যান্ড ৩.৩ শতাংশ। যদিও এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাংকের পূর্বাভাস অনুযায়ী বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি দাঁড়াবে ৬.৫% যা হবে দক্ষিণ এশিয়ার ৩য় সর্বোচ্চ। কিন্তু এমইআই দক্ষিণ এশিয়ার গন্ডি পেরিয়ে বিশ্বের অবস্থাসম্পন্ন ৪৮ দেশের কনজিউমারদের তথ্য বিশ্লেষণ করে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
এমইআই প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০২৪ সালে বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতির সম্ভাব্য হার হবে ৭.২৫ শতাংশ। যেখানে ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি ছিল সর্বোচ্চ ৯.২ শতাংশ। ৪৮টি দেশের মধ্যে ২০২৪ সালে বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি হবে ৭.২৫ শতাংশ। ৪৮ দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতির বিবেচনায় বাংলাদেশের অবস্থান হবে ৪র্থ।
এমইআই এর প্রতিবেদনে ৪৮ টি দেশের আরো কিছু তথ্য উঠে এসেছে। এরমধ্যে ২০২৪ সালে বাংলাদেশের মানুষ বিনোদন ও ঘুরাঘুরিতে বেশি অর্থ খরচ করবে। গৃহস্থলি কেনাকাটায় মানুষ আরো বেশি অর্থ খরচ করবে। এছাড়া মানুষের টাকা জমিয়ে রাখা বা পরবর্তী সময়ের জন্য সঞ্চয় করে রখার প্রবনতা কমবে। গৃহস্থলি পণ্য এবং পোশাকের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে একটি নতুন উত্থানের আশা করছে এমইআই।