দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে দুইদিন বৃষ্টির পর তাপমাত্রা মেনে শীত জেঁকে বসতে শুরু করেছে। এতো ঠান্ডার শুরুতেই কাঁবু জনজীবন। মানুষের পাশাপাশি গৃহপালিত প্রাণিরাও কাবু হয়ে পড়েছে এই শীতে। কুয়াশার চাঁদরে ঢাকা পড়ছে সূর্য্যরে আলো। দুপুরে সূর্য্য উঠলেও নেই সূর্য্যরে তাপ। হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। গতকাল সোমবার (১১ ডিসেম্বর) সকাল ৬ টায় দিনাজপুরের তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে সকাল ৯ টায় তাপমাত্রা কমে ১৩ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে এসেছে।
জানা যায়, গত রোববার (১০ ডিসেম্বর) দিনাজপুরের তাপমাত্রা নেমেছিল ১৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। দেশের সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল পঞ্চগড়ে। যার তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সরেজমিনে দেখা যায়, সোমবার (১১ ডিসেম্বর) সকাল ১০ টা পর্যন্ত ঘনকুয়াশা থাকায় হেডলাইট জ্বালিয়ে সড়কে চলাচল করেছেল ছোটবড় সব ধরনের যানবাহন বিভিন্ন যানবাহন। মানুষজনের খুব কম বের হয়েছেন বাসা-বাড়ি থেকে। যারা বের হয়েছেন কর্মের তাগিদে তারাও পুরোদমে শীতের কাপড়চোপড় পড়েই বের হয়েছেন। গৃহপালিত প্রাণীসহ বেওয়ারিশ বিভিন্ন পশু-পাখিতে কাবু হতে দেখা গেছে এই শীতে। কেউ কেউ শীতের দাপট থেকে বাঁচতে গরু ছাগলকেও চটের বস্তা মুড়িয়ে রেখেছেন।
দিনাজপুর আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, সোমবার (১১ ডিসেম্বর) সকাল ৬ টায় দিনাজপুরের তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আদ্রতা ৯৯%। তবে সকাল ৯ টায় তাপমাত্রা কমে ১৩ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসে। রোববার (১০ ডিসেম্বর) জেলায় তাপমাত্রা নেমেছিল ১৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। বাতাসের আদ্রতা ছিল ৯৭%। দেশের সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল পঞ্চগড়ে। যার তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে শনিবার (৯ ডিসেম্বর) সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিল ১৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে, হঠাৎ শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় বেড়েছে শীতবস্ত্রের কদর। এখন থেকেই জমজমাট ফুটপাতে বসা শীতের কাপড়ের দোকানগুলো। রোববার (১০ ডিসেম্বর) রাতে নিমতলা মোড়স্থ সাবেক উর্বশী সিনেমা হলের পেছনে বসা পুরাতন শীতবস্ত্রের দোকানে দেখা যায়, কাপড়ের দোকানগুলোয় বেড়েছে মানুষের ভীড়। কম মূল্যে সেসব কাপড় ক্রয় করছেন শীতার্ত মানুষ।
অন্যদিকে, কনকনে ঠা-ায় ফুলবাড়ী উপজেলাসহ দিনাজপুর জেলাজুড়ে অসহায় মানুষের দুর্ভোগ অনেক বেড়েছে। বিকেল থেকে সকাল পর্যন্ত অনুভূত হচ্ছে তীব্র শীত। আর সকালে কাজের সন্ধানে বের হয়ে নি¤œ আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ পড়ছেন বিপাকে।
শীতার্ত ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান চালক মোকছেদুল ইসলাম ও পথচারী সামসুল আলম বলেন, হঠাৎ করে ফুলবাড়ীতে দুইদিন বিরতীহীন বৃষ্টি হওয়ায় শীতের তিব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। কুয়াশার কারণে সকালে কোনো কাজকর্ম করা যাচ্ছে না। এখন গরম কাপড় পড়েও কনকনে ঠা-ায় থাকা মুশকিল হয়ে যাচ্ছে।
ফুলবাড়ী প্রেসক্লাবের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক অমর চাঁদ গুপ্ত অপু বলেন, প্রচ- ঠা-া শুরু হয়েছে। এতে শিশুসহ বয়স্করা কাবু হয়ে পড়ছে। নানান প্রকার শীত জনিত রোগবালাই দেখা দিচ্ছে ঘরে ঘরে। মানবিক সহায়তাকারীদের উচিৎ এখন থেকেই শীতার্তদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদেরকে শীতবস্ত্র প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
দিনাজপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, হঠাৎ দুইদিন বৃষ্টি হওয়ায় জেলায় শীতের তিব্রতা বেড়েছে। ধীরে ধীরে শীত আরো বাড়বে।