স্বতন্ত্র প্রার্থীদের দলের পক্ষ থেকে উৎসাহিত করার কথা বলা হলেও এবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী ফ্রি স্টাইল হবে না।
মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের সভাপতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
নির্বাচনে জোট করার বিষয়ে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জোটবদ্ধ হবে মানে তারা কারা কারা প্রার্থী, সেটা আমরা দেখি। আমাদের হাতে কিন্তু সময় আছে। আমরা যত কিছুই বলেছি, আমাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের তারিখ ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত আমাদের হাতে সময় আছে। এর মধ্যে আমরা অবজার্ভ করব, মনিটর করব, অ্যাডজাস্ট করব, অ্যাকোমোডেট করব। যেখানে যেটা প্রয়োজন, সেটা আমরা করব। স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিষয়টাও এরকম এবং ডামি ক্যান্ডিডেটের ব্যাপারেও বিষয়টা এরকম। ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে সবকিছু চূড়ান্ত হয়ে যাবে।’
স্বতন্ত্র প্রার্থী নিয়ে এরই মধ্যে তৃণমূলে এক ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে এই বিষয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না, বিশৃঙ্খলা… ফ্রি স্টাইলে হবে না। আমরা দেখি কারা কারা চাইছেন। সেটার ওপরে আমাদের একটা সিদ্ধান্ত আছে। আমাদের একটা কৌশলগত সিদ্ধান্ত আছে। সেই সিদ্ধান্ত ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত আমাদের হাতে সময় আছে। কাজেই এর মধ্যে আমরা এখানে পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সযোজন, সংশোধন, অ্যাকোমোডেশন—সবকিছু আমরা করতে পারি।’
একেক আসনের জন্য একেক ধরনের কৌশল অনুসরণ করা হবে কি না, প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘একটা দলের কৌশল তো থাকবেই। আমাদের দলের কৌশল তো থাকবেই। আমরা নির্বাচন করছি, আমরা একটা রাজনৈতিক দল, আমাদের কৌশলগত দিক তো থাকবেই।’
বিএনপিকে নির্বাচনে আনার কোনো কৌশল আছে কি না, জানতে চাইলে কাদের বলেন, ‘(নির্বাচনে) আনার কৌশল আমাদের নেই। তারা এলে আমাদের আপত্তি নেই। তারা এলে স্বাগতম।’
‘কেউ কেউ আসতে পারেন, কেউ কেউ প্রস্তুতিও নিচ্ছেন নির্বাচনের। সেটা তো জমা দেওয়া শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর, এর মধ্যেই সেটা পরিষ্কার হয়ে যাবে যে, কারা আসবে’, বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘তারা (বিএনপি) যদি নির্বাচনে আসে, এর মধ্যে সবকিছু দেখে আমরা আমাদের কৌশল নির্ধারণ করব।’
গণমাধ্যমকর্মীদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রথম কথা হচ্ছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এখন বিভিন্ন জন বিভিন্ন রকম মন্তব্য করছে। এখন বিদেশি বন্ধুরাও এখানে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। ইতোমধ্যে প্রায় ১০০ পর্যবেক্ষক আসবে এমন আভাস আমরা পাচ্ছি। এই সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে। এখানে নানা মুনির নানা মত থাকবেই। আমাদের লক্ষ্য হলো শান্তিপূর্ণ, অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য একটা নির্বাচন করা। এখন নির্বাচনের প্রক্রিয়া চলাকালীন বিভিন্ন জন বিভিন্ন কথা বলতে পারে। আলটিমেটলি নির্বাচনটা শান্তিপূর্ণ করে আমরাও দেখিয়ে দিতে চাই যে, আমরা অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছি। তারপর অনেক সমালোচনাই হয়তো বন্ধ হয়ে যাবে। এখন অনেকে সমালোচনা করছেন…জল্পনা-কল্পনা করছেন। এসব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটবে যখন নির্বাচনটা সুন্দরভাবে হয়ে যাবে।’
শরিকদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা ৩০০ আসনেই নৌকা দেবো। অ্যাডজাস্টমেন্ট যখন হবে, তখন প্রয়োজনে ছেড়ে দেবো। কোনো অসুবিধা নেই।’
দলের সভাপতি ও আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের সব নেতাকর্মীকে নির্বাচন কমিশনের আচরণবিধি মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছে বলেও জানান ওবায়দুল কাদের।