ঘরের মাঠে টেস্টে স্পিনই বাংলাদেশের প্রধান শক্তি। আর খেলা যদি হয় উপমহাদেশের বাইরের কোনো দলের বিপক্ষে তাহলে তো কথাই নেই। সহজ এই পথেই হাঁটা অনুমেয়। তবে সিলেট টেস্টে এত সহজে সমাধান টানা যাচ্ছে না।

বাংলাদেশে খেলা বলেই প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড তেমন প্রস্তুত হয়েই এসেছে। মাত্র তিন পেসারের সঙ্গে স্কোয়াডে রেখেছে বিশেষজ্ঞ চার স্পিনার। উপমহাদেশের বাইরের অন্য দলগুলোর তুলনায় কিউইরা স্পিনেও অনেক পারদর্শী। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তাই একদম টার্নিং উইকেট দিলে ঝুঁকিটা বাংলাদেশের জন্যও থাকবে বেশি। বাংলাদেশের ব্যাটারদের তুলনায় স্পিন বরং ভালোই সামলান ব্ল্যাক ক্যাপসরা। হোম কন্ডিশনের সুবিধা এক্ষেত্রে কাজে লাগানো মুশকিল।

সিলেটের উইকেটের ঐতিহ্যের কারণেও একদম টার্নিং উইকেট পাওয়া কঠিন। এমনিতে বেশ ভালো বাউন্স থাকায় সিলেটে ব্যাটাররা পান বাড়তি সুবিধা। ইনিংসের শুরুর দিকে প্রভাব বিস্তার করেন পেসাররা। নভেম্বরের শেষ প্রান্তে সিলেটে সকাল বেলা শিশিরের প্রভাবও থাকবে। শুরুতে তাই স্পিন নয়, পেসের ভূমিকাই হয়তো মুখ্য থাকবে। বেলা বাড়ার সঙ্গে স্পিনাররা দাপট দেখাতে পারেন। তবে উইকেট মিরপুরের মতো মন্থর হওয়ার সম্ভাবনা কম।

স্পোর্টিং উইকেটে সবার জন্যই থাকবে কিছু না কিছু। এমন সারফেসে দক্ষতা আর অভিজ্ঞতায় এগিয়ে থাকা দলই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয়। পুরো শক্তির নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তাই এক্ষেত্রে বাংলাদেশের কঠিন চ্যালেঞ্জ। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্রের শুরুর টেস্টে বাংলাদেশ স্কোয়াডে রেখেছে চার স্পিনার। আছেন তিন পেসার। অর্থাৎ দুই দলের সমন্বয়ও প্রায় একই। স্পিন আক্রমণে বাংলাদেশের প্রধান দুই ভরসা তাইজুল ইসলাম আর মেহেদী হাসান মিরাজ আছেন।

কিন্তু পেস আক্রমণ নিয়ে স্বাগতিকদের বেশ ভুগতে হতে পারে। চোটের কারণে প্রধান দুই পেসার তাসকিন আহমেদ আর এবাদত হোসেন নেই। সৈয়দ খালেদ আহমেদের সঙ্গে আছেন শরিফুল ইসলাম আর হাসান মাহমুদ। হাসান আছেন অভিষেকের অপেক্ষায়। প্রতিপক্ষের পেস আক্রমণে অধিনায়ক টিম সাউদির সঙ্গে কাইল জেমিসন আর নেইল ওয়েগনার। দক্ষতা আর অভিজ্ঞতা মাপলে পেস আক্রমণ দিয়ে প্রতিপক্ষের ওপর চ্যালেঞ্জ জানানোর অবস্থায় নেই বাংলাদেশ।

তার চেয়ে রান করা যায় এমন উইকেটে খেলা হতে পারে একটি ভালো বিকল্প। টেস্টের আয়ু লম্বা করতে পারলে সবার জন্যই সুযোগের দরজা খুলে যাবে।

এদিকে সিলেটে পুরোদমে অনুশীলন প্রতিদিনই কথা বলছেন নিউজিল্যান্ডের কেউ না কেউ। গত শুক্রবার অনুশীলন সেরে রাচিন রবীন্দ্র জানান, বিশ্বকাপের মতো টেস্টেও রানের খোঁজে থাকবেন তিনি তবে কন্ডিশনের ওপর নির্ভর করছে অনেক কিছু, ‘আপনার অভিপ্রায় দরকার…আপনি সবসময় রান করার লক্ষ্যে থাকেন। এটা আপনাকে রান করার ভালো সুযোগ করে দেয়। কিন্তু এখানে (বাংলাদেশ) মনে হয় কন্ডিশনের ওপরও অনেক কিছু নির্ভর করে।’

বিশ্বকাপে বাজে ব্যাট করে খারাপ ফল করা বাংলাদেশের জন্য রান করাটা আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতেও জরুরি। সাকিব আল হাসান ও লিটন দাসের অনুপস্থিতিতে নাজমুল হোসেন শান্ত, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিমদের ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল থাকতে হবে টিম ম্যানেজমেন্টকে।