বিশেষ প্রতিনিধি

আগামী ৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সংগঠিত হচ্ছে বিরোধীদলগুলো। তবে বড় বিরোধীদল বিএনপি এখনও নিজেদের সংগঠিত করতে পারেনি। তৃণমূলের নেতারা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিলেও শীর্ষনেতৃত্ব থেকে নির্দশনা না আসায় তারা ঘোষণা দিতে পারছে না। বিশ্লেষকরা বলছেন, আগামী ৫বছরের ভাগ্য নির্ধারণে যদি বিএনপি সিদ্ধান্ত নিতে না পারে তবে তার কর্মী সমর্থকদের কী জবাব দেবে?

রাজনৈতিক দল হিসেবে ২০২৩ সালে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধিত হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম)। দলীয় প্রতীক হিসেবে পেয়েছে নোঙর। আসন্ন দ্বাদশ নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা। যদিও তাদের তৎপরতা নিয়ে বিএনপি জামায়াত থেকে কিছু বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। যদিও দলটির নেতারা বলছেন, কারও ইন্ধনে নয়, সংসদে শক্তিশালী বিরোধী দল হতেই নির্বাচনে যাবে বিএনএম।

এদিকে, বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির নেতৃত্বে নতুন জোট যুক্তফ্রন্টের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে বুধবার (২২ নভেম্বর)। আত্মপ্রকাশের দিনে দলীয় সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তফ্রন্ট। নতুন জোটে থাকা দলগুলো হলো– বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি (হাত ঘড়ি প্রতীক), বাংলাদেশ মুসলীম লীগ-বিএমএল (হাতপাঞ্জা), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (কাঁঠাল প্রতীক)। সংবাদ সম্মেলনে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহীম নতুন জোটের আত্মপ্রকাশের ঘোষণা দিয়ে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে জোটগতভাবে অংশ নেওয়ার কথা জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে প্রস্তুত হয়েছি। সম্ভাবনা আছে ৩০ নভেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিলের দিন কয়েকটা দিন বিলম্ব হতে পারে, নাও হতে পারে। যদি মনোনয়নপত্র দাখিলের দিন বিলম্ব হয়, তাহলে বাকি তারিখগুলোও আনুপাতিকহারে বৃদ্ধি পাবে। আমাদের জোট যুক্তফ্রন্ট সিদ্ধান্ত নিয়েছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটগতভাবে অংশ নেবো। এর জন্য আমরা একটি বড় ঝুঁকি নিচ্ছি। অতীতেও আন্দোলনের অংশ হিসেবে বড়-ছোট দল নির্বাচনে অংশ নিয়েছে।’

এর আগে বিএনপির সাবেক দুই নেতাকে সামনে রেখে ২০২১ সালে ৭ জুলাই গঠিত হয় বিএনএম। দলটির আহ্বায়ক হিসেবে ছিলেন বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক আবদুর রহমান। বর্তমানে তিনি কার্যনির্বাহী সদস্য হিসেবে আছেন। কারা যুক্ত হলো বলতে গিয়ে বিএনএম-এর  মহাসচিব ড. মো. শাহজাহান বলছেন, শুধু বিএনপি নয়, আওয়ামী লীগের জেলা–উপজেলা পর্যায়ের অনেক জনপ্রিয় নেতাসহ দেশের রাজনীতিতে প্রভাবশালী ও সমাজে পরিচিতি রয়েছে এমন অনেকেই বিএনএমের আসতে চাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘যাদের আমাদের দলের নীতির সঙ্গে মিল রয়েছে, সৎ, সাহসী, নির্ভিক, দুর্নীতিমুক্ত, ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা রয়েছে তাদেরই আমরা দলে রাখছি। দলছুট বা বাগাতে পারি বিষয়টা এরকম না। তবে এটা সত্য বিএনপি থেকে আপাতত বেশি আসছে এবং সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবেই আসছে।’

বিএনপিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) সভাপতি ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, ‘নির্বাচনের ট্রেনে উঠুন, আর না হয় কলার ভেলায় চড়ে সাগরে ভেসে যাবেন।’ বিএনপিকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে আর ‘৭৫ বা ‘৮২ বা ১/১১-এর মতো ভূতের সরকার, সামরিক সরকার হবে না। ওই আশায় বসে না থেকে নির্বাচনি ট্রেনে উঠে পড়ুন। দেশকে সাংবিধানিক ধারায় চলতে সাহায্য করুন।’