দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে জনসাধারণের চলাচলের রাস্তায় বাঁশের বেড়া দেয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ৪৯টি পরিবারের লোকজন। গত ২৮ অক্টোবর শনিবার বিকেলে ভুক্তভোগী অসহায় পরিবারগুলো স্থানীয় দবিরের বাজারে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন। এ ঘটনায় গত ২৯ অক্টোবর রবিবার সকালে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও রাস্তা খুলে দেয়ার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে অন্তত দেড় শতাধিক এলাকাবাসী স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগপত্র উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট দাখিল করেছেন অবরুদ্ধ এলাকাবাসী।
জানা গেছে, উপজেলার সাঁইতাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম সাঁইতাড়া গ্রামের দবিরের বাজারের সন্নিকটে দরবেশ পাড়ায় চলাচলের রাস্তার মাঝ বরাবর বাঁশের বেড়া দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই এলাকার কিনামদ্দিন ও তার ছেলে মাদরাসা শিক্ষক আকতার হোসেনের বিরুদ্ধে। এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বিগত ৫০ বছর ধরে এ রাস্তাটি দিয়ে এলাকার লোকজন যাতায়াত করতো। কিনামদ্দিন ও তার ছেলে আকতার হোসেন গত ৫ বছর পূর্বে রাস্তাটি বন্ধ করে পাকা বাড়ি নির্মাণ কাজ শুরু করলে এলাকাবাসী বাঁধা দেয়। এ নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান-সদস্য ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি বিষয়টি আপোষ মিমাংসা করে দেন। বৈঠকে অভিযুক্ত পিতাপুত্র বিকল্প রাস্তা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন এবং সেই মোতাবেক এলাকাবাসী ও ইউনিয়ন পরিষদ ৪০দিনের কর্মসূচীর লোকজন দিয়ে ইউপি সদস্য মনিন্দ্র নাথের উপস্থিতিতে ১০দিনের অক্লান্ত পরিশ্রমে বিকল্প রাস্তাটি নির্মাণ করা হয়। যা বিগত ৫ বছর ধরে এলাকার লোকজন ওই রাস্তা দিয়ে সাচ্ছন্দ্যে যাওয়া আসা করতো। কিন্তু গত ২৪ অক্টোবর মঙ্গলবার বাঁশের বেড়া ও গাছ লাগিয়ে ওই রাস্তা বন্ধ করে দেন কিনামদ্দিন ও তার ছেলে মাদরাসা শিক্ষক আকতার হোসেন। ভুক্তভোগী এলাকাবাসী রাস্তা বন্ধ করার বিষয় জানতে চাইলে তাদেরকে মারপিটসহ হামলা মামলার হুমকি প্রদান করেন। ফলে গত কয়েকদিন ধরে ৪৯টি পরিবারের মধ্যে কমপক্ষে ৩০টি পরিবারের দেড় শতাধিক মানুষের চলাচল একবারেই বন্ধ হয়ে যায়। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে সমাধানের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।
এ বিষয়ে প্রতিবেশী দবিরুল ইসলাম বলেন, প্রায় ৫০ বছর ধরে এলাকার লোকজন এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করে আসছে। হঠাৎ কিনামদ্দিন ও তার ছেলে রাস্তার মাঝে বেড়া দিয়েছে। এটা অমানবিক কাজ।
ওই এলাকার মসজিদের ইমাম আলতাফ হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শান্তিপূর্ণভাবে চলাচল করা রাস্তাটি হঠাৎ করে বন্ধ করে দেয়ায় অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে সাঁইতাড়া ইউপি চেয়ারম্যান সন্তোষ কুমার রায় বলেন, রাস্তা বন্ধের বিষয়টি জানার পর ওই এলাকার ইউপি সদস্য রবীন্দ্র নাথ, ইউপি সদস্যাসহ গ্রামপুলিশকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু কিনামদ্দিন ও তার ছেলে আকতার হোসেন বিষয়টি আমলে নেননি।
এ ব্যাপারে কিনামদ্দিন ও তার ছেলে আকতার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে তার বাড়িতে গেলে কেউ দরজা খুলেননি এবং বাড়িতে নেই বলে ভিতর থেকে জানান। পরে মুঠোফোনে আকতার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এখন আমার সময় নেই, পরে কথা বলবো বলে ফোন কেটে দেন।
অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) একেএম শরিফুল হক বলেন, চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেয়া সংক্রান্ত বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টির তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।