নিজস্ব প্রতিবেদক:

ঢাকা থেকে রাজশাহী ও রংপুর মাহসড়কে আর ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হবে না যাত্রীদের। বলছেন ওই সড়কের যাত্রী এবং পরিবহন শ্রমিকরা। ওই দুই মহাসড়কে ১৪টি ওভারপাস উদ্বোধনের পর সাংবাদিকদের কাছে এই প্রতিক্রিয়া জানান তারা। ওই একই দিনে দেশের আট বিভাগের ৩৯টি জেলায় ১৫০টি সেতু উদ্বোধন করা হয়। সেতুগুলে্ উদ্বোধনের পর একই রকম উচ্ছ্বাস জানান সাধারণ মানুষ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার রাজধানীর হাতিরঝিলের সড়ক ভবনে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ১৫০ সড়ক সেতুর উদ্বোধন করেন।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনা বিশেষ করে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন আনতে এবং মানুষের যাতায়াত ব্যবস্থা সহজ করতে নানামুখি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এই ১৫০ সেতু নির্মাণে মোট ব্যয় হয়েছে তিন হাজার ২৫৭ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। ১৫০টি সেতুর মোট দৈর্ঘ্য হচ্ছে ৯ হাজার ৪৫৩ দশমিক ৫৩মিটার।

এর আগে গত বছরের ৭ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশে ১০০টি সড়ক সেতুর উদ্বোধন করেছিলেন। সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে এ নিয়ে এখন পর্যন্ত গত ১৫ বছরে মোট ১১ হাজার ৩১টি সেতু নির্মাণ করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। এছাড়াও দেশের সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে মহাসড়ক, আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক মহাসড়কে ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। এক্সপ্রেসওয়ে, মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করা, পদ্মা সেতু নির্মাণ, ফ্লাইওভারসহ ছোট-বড় সেতু, কালভার্ট, আন্ডারপাস নির্মাণ করেছে।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী জানিয়েছেন, এসব সেতু নির্মাণের ফলে এখন ওই অঞ্চলগুলো সারাদেশের যোগাযোগ নেটওয়ার্কের আওতায় এসেছে। ফলে এসব এলাকার সাধারণ মানুষের ভোগান্তি যেমন কমবে, তেমনি ৩৯ জেলার কৃষকরা তাদের কৃষিপণ্যও দ্রুত বাজারজাত করতে পারবেন।

বৃহস্পতিবার উদ্বোধন করা ১৫০টি সেতুর মধ্যে পাঁচটি সেতু রয়েছে জামালপুরের জামালপুর-ধানুয়া-কামালপুর-কদমতলী মহাসড়কে। এই সড়ক দিয়ে কুড়িগ্রামের রৌমারী স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে উঠেছে।  সড়কটিতে পাঁচটি গুরুত্ত্বপূর্ণ সেতু না থাকায় এতো দিন পণ্য পরিবহণে কাঠখড় পোহাতে হয়েছে আমদানি ও রপ্তানিকারকদেরকে। এবার সেতুগুরো উদ্বোধন হওয়ায় সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন হরো। একই সঙ্গে রৌমারী স্থলবন্দরের গুরুত্বও আগের চেয়ে কয়েকগুণ বেড়ে যাচ্ছে।

একটি সেতুর অভাবে হাওর জনপদ সুনামগঞ্জের ছাতকের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ ছিলো হাওরবাসীর। এবার ছাতকের সুরমা নদীতে সেতু নির্মাণের ফলে সেই হাওরবাসীর দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন পূরণ হলো।  ৪০২ দশমিক ৬১ মিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতু এখন বদলে দিবে ছাতকের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হাওরপাড়ের মানুষের জীবনযাত্রা। কৃষিপণ্য পরিবহনেও ঘটবে বড় পরিবর্তন।