নীলফামারীর সৈয়দপুরসহ দেশের উত্তর জনপদের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল পাইপলাইনের মাধ্যমে প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহের। অবশেষে তাদের সেই দাবি পূরণে বগুড়া থেকে পাইপলাইনে গ্যাস পৌঁছলো নীলফামারীর সৈয়দপুরে।
শনিবার বগুড়া-রংপুর-সৈয়দপুর গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইনে প্রাকৃতিক গ্যাস দ্বারা টেস্টিং এন্ড প্রি-কমিশনিং পরীক্ষামূলক কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। এ পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন গ্যান্স ট্রান্সমিশন কোম্পানী লিমিটেডের (জিডিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী রুখসানা নাজমা ইছহাক।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে গ্যান্স ট্রান্সমিশন কোম্পানী লিমিটেডের (জিডিসিএল) মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু সাঈদ মাহমুদ, মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী জহির উদ্দিন, মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো.আইনুল কবির ও প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী খোন্দকার আরিফুল ইসলামসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানী লিমিটেডের (জিটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী রুখসানা নাজমা ইছহাক বলেন, বগুড়া-রংপুর- সৈয়দপুর গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইনে প্রাকৃতিক গ্যাস দ্বারা টেস্টিং এন্ড প্রি-কমিশনিং পরীক্ষামূলক কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এখন গ্যাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান তাদের সার্বিক কার্যক্রম শেষে এ অঞ্চলের শিল্প-কলকারাখানাগুলোতে চাহিদা মোতাবেক গ্যাস সরবরাহ করতে পারবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নীলফামারীর সৈয়দপুরসহ দেশের উত্তর জনপদের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল পাইপলাইনের মাধ্যমে প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহের। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিগত ২০১১ সালে রংপুর সফরে এসে পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন। এরপর গত ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে একনেক সভায় বগুড়া-রংপুর- সৈয়দপুর পর্যন্ত পাইপলাইনে প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের আওতাধীন গ্যাস কোম্পানী লিমিটেড (জিটিসিএল) এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করে।
সূত্রটি আরো জানায়, বগুড়া থেকে রংপুর হয়ে নীলফামারীর সৈয়দপুর পর্যন্ত ৩০ ইঞ্চি ব্যাসের ১৫০ কিলোমিটার গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন স্থাপন কাজ সম্পন্ন করা হয়। এছাড়াও গ্যাস সরবারহের জন্য রংপুর, পীরগঞ্জ ও নীলফামারী সৈয়দপুরে তিনটি স্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে নীলফামারীর সৈয়দপুরে ১০০ মিলিয়ন, রংপুরে ৫০ মিলিয়ন এবং পীরগঞ্জে ২০ মিলিয়ন ক্ষমতাসম্পন্ন স্টেশন রয়েছে।
সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মোখছেদুল মোমিন এ প্রসঙ্গে বলেন, উত্তরাঞ্চলের মানুষের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি কৃষি। এ অঞ্চলের বিশাল এক জনগোষ্ঠীর জীবন ও জীবিকা কৃষির ওপর নির্ভরশীল। এতে করে বছরের বেশি ভাগ সময় বিপুল সংখ্যক মানুষ বেকার থাকেন। তবে এবার ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। গ্যাস আসায় এখন এ অঞ্চলে গড়ে উঠবে নুতন নতুন শিল্প, কলকারখানা। ফলে তৈরি হবে এ জনপদের মানুষের কাজের সুযোগ। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগও আরো বাড়বে।
এদিকে, সৈয়দপুরে গ্যাস আসার খবরে উত্তরাঞ্চলের রাজনীবিদ, ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষেরা এখন খুশিতে উচ্ছসিত। তারা বলছেন, এতে করে এ অঞ্চলে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত হওয়ায় নতুন নতুন শিল্প-কলকারখানা গড়ে উঠবে। এতে করে এ অঞ্চলের মানুষের জীবনমান অনেকটাই পাল্টে যাবে।