বর্তমান সমাজে একেকজন একেকভাবে জীবনযুদ্ধ করে টিকে রয়েছেন। কেউবা ভূমিহীন, কেউবা ঝিয়ের কাজ করে আবার কেউবা দিনমজুরি করে প্রতিনিয়ত জীবনযুদ্ধ করে চলেছেন। এসব জীবনযোদ্ধাদের মধ্যে অনেকেই বসবাসের স্থান বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে খুশি হয়েছেন। তেমনি জীবনযুদ্ধে ভূমিহীন হয়ে পড়া শরিয়তুন নেছা (৫৫) বর্তমান সরকারের সহযোগিতায় আবার মাথা গোজার ঠাঁই পেয়েছেন দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার গোয়ালডিহি ইউনিয়নের বটতলী আশ্রায়ণে। তিনি প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহারের ঘর পেয়ে ফাঁকা জায়গায় লাগিয়েছেন বিভিন্ন শাক-সবজি। এখন তাঁর চোখে-মুখে আনন্দ আর উচ্ছ্বাস। তিনি জানান, ১৩ বছর পূর্বে তার স্বামী আছিমদ্দিন মৃত্যুবরণ করেন। স্বামী মৃত্যুবরণ করায় তার সংসার জীবনে নেমে আসে অনামিষার ঘোর অন্ধকার। সংসার চালানোসহ মেয়েদের বিয়ে দেয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন তিনি। স্বামীর রেখে যাওয়া শেষ সম্বল ভিটেমাটিটুকু বিক্রি করে দুই মেয়েকে বিয়ে দেন। নিজেই ভূমিহীন হয়ে পড়েন। সংসার চালানোই কঠিন সেখানে থাকার জায়গা কীভাবে করবো। অন্যের বাড়িতে দিনমজুরি করে কোনো রকমে দিনাতিপাত করি। অবশেষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার পেয়ে এই আশ্রায়ণে একটি থাকার ঘর বরাদ্দ পেয়েছি। এই ঘর পেয়ে এখন আবার তার মুখে হাসি ফিরে এসেছে। মেয়ে-জামাইসহ তার পরিবারে এখন ৫ জন সদস্য রয়েছে।
ওই আশ্রায়ণের এমনি আরেকজন হলেন-রাবেয়া বেওয়া (৬৫)। তাঁর স্বামী জিকরুল হক ৩২ বছর পূর্বে মৃত্যুবরণ করেন ছেলেসহ তাঁর ৬ সদস্যের পরিবার। সংসার চালাবেন কীভাবে তা নিয়ে তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েন। অনেক কষ্টে বটতলী বাজারে ক্ষুদ্র পরিসরে চায়ের দোকান করে সংসার চালান। তাঁকে সহযোগিতা করেন তার ছেলে। সংসার চললেও একটি নিজের থাকার ঘরের প্রয়োজন দেখা দেয়। অবশেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে বটতলী আশ্রায়ণে একটি ঘর পান তিনি। তিনি জানান, জীবনের বড় একটি প্রাপ্তি এই ঘর। এখন চা-দোকান করেই সংসার চালিয়ে শেষ বয়সে এসে নিজের বাড়িতে থাকতে পারছি। এর চেয়ে কী আনন্দের হতে পারে! শুধু শরিয়তুন নেছা আর রাবেয়াই নন এমন অনেক ভূমিহীন, গৃহহীন ও হতদরিদ্র্য মানুষ প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে আনন্দিত-উচ্ছ্বাসিত। তারা এখন দিন শেষে কাজ-কর্ম করে রাতে নিশ্চিন্তায় ঘুমাতে পারছেন।