দেশে ডেঙ্গু মশার বিস্তার বাড়ছেই। এডিস মশাবাহিত ভাইরাসটির সংক্রমণের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুও। গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৭ জন এবং ঢাকার বাইরের ৫ জন। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৬৪ জনে। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ৯৫৯ জন। যা চলতি বছর একদিনে আক্রান্তের সংখ্যার দিক থেকে সর্বোচ্চ। এর আগে গতকাল বুধবার একদিনে ২ হাজার ৮৪৪ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন। দৈনিক আক্রান্তের দিক দিয়ে গতকাল পর্যন্ত সেটিই ছিল সর্বোচ্চ। এর আগে গত রোববার একদিনে রেকর্ড ২ হাজার ৭৬৪ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন। সে হিসাবে পাঁচদিনের ব্যবধানে তিনবার চলতি বছরের দৈনিক আক্রান্তের রেকর্ড ভাঙলো।
বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের ইনচার্জ মো. জাহিদুল ইসলাম সই করা ডেঙ্গুবিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বুধবার (৯ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ৯৫৯ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ১ হাজার ৯৭ জন ও ঢাকার বাইরের ১ হাজার ৮৬২ জন। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৯ আগস্ট পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মোট ৭৮ হাজার ২৮ জন। তাদের মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ৩৯ হাজার ৯১১ জন আর ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন ৩৮ হাজার ১১৭ জন। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৩৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ২৮৩ জন এবং ঢাকার বাইরের ৮১ জন। মোট মৃত্যুর শতকরা হার শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ।
বছরের একই সময়ে আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৬৭ হাজার ৮৭৪ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৩৫ হাজার ১৬৮ জন এবং ঢাকার বাইরের ৩২ হাজার ৭০৬ জন। ২০২২ সালে ডেঙ্গুতে দেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ ২৮১ জন মারা যান। ওই বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে ডেঙ্গুতে ২৭ জনের মৃত্যু হয়। একই সঙ্গে আলোচ্য বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৬২ হাজার ৩৮২ জন। তবে চলতি বছরের প্রথম সাত মাসেই ডেঙ্গুতে মৃত্যু অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।