নীলফামারীর ডোমার উপজেলার এক দম্পতির ঘরে জন্ম নেয় এক দেহে দুই মাথা বিশিষ্ট নবজাতকটি। কিন্তু আলোর ধরায় গোলাপ কুঁড়ির মত বিকশিত হতে পারলোনা নবজাতক পুত্র সন্তানটির জীবন। জন্মের মাত্র আট ঘন্টায় নিভে গেল নবজাতকটির প্রাণ।
গত বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) ভোর ৫টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নবজাতকটির মৃত্যু হয়।
এর আগে বুধবার (১২ জুলাই) রাত ৯টায় ডোমার শহরের বেসরকারি ডক্টর ক্লিনিকে সিজারের মাধ্যমে শিশুটির জন্ম হয়। নবজাতকটি ডোমার পৌরসভার পূর্ব চিকনমাটি সবুজপাড়ার বাসিন্দা আশিকুর-ফারজানা দ¤পতির সন্তান ছিল। শিশুটি তাদের দ্বিতীয় সন্তান হিসাবেই এসেছিল।
শিশুটির বাবা জানান, স্ত্রীর গর্ভে যখন দ্বিতীয় সন্তান আসে তখন ক্লিনিকে পরীক্ষা করে জানতে পারি আমার স্ত্রীর গর্ভে দুই মাথাবিশিষ্ট একটি সন্তান রয়েছে। কিন্তু ক্লিনিকের চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থার জন্য রংপুর কিংবা ঢাকায় স্থানান্তরিত করার কোন পরামর্শ দেয়নি। বরং তাদের ক্লিনিকেই চিকিৎসা চালিয়ে যেতে বলে। পরে ওই ক্লিনিকের চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বুধবার সন্ধ্যায় ক্লিনিকে নিয়ে যাই স্ত্রীকে। সেখানে রাত ৯টায় সিজারের মাধ্যমে নবজাতকের জন্ম হয়। সিজারে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ২০ হাজার টাকা নেয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। রাতেই নবজাতক ও তার মাকে রংপুর মেডিকেলে নিয়ে এসে ভর্তি করি। শিশুটিকে অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছে। পরে বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার দিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটির মৃত্যু হয়। তবে প্রসূতি (নবজাতকের মা) সুস্থ ও ভাল আছে। নবজাতকটির বাবা আশিকুর অভিযোগ করে বলেন, যদি উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজনই ছিল তাহলে ডোমারের ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ এখানে সিজার করলো কেন। আমাকে তারা আর্থিক ও মানষিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ যেমন করলো তেমনি তারা দ্বিতীয় সন্তানটিকে বাঁচতেও দিলোনা।
সচেতন মহল বলছে নি®পাপ প্রাণটিকে বাঁচানোর চেয়ে বেসরকারি ক্লিনিকটি আগে তার ব্যবসাটা করে নিয়েছে। আর হোচট খেয়েছে নবজাতকটির পরিবার।
ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গাইনি ও প্রসূতি বিশেষজ্ঞ ডা. ফারজানা আক্তার জানান, কনজয়েন টুইনের কারণে এমন বাচ্চা ভূমিষ্ঠ হয়। বাচ্চা যমজ থাকার কারণে গর্ভে দেহ এক থাকলেও মাথা আলাদা হয়। এই বাচ্চাগুলোর জন্য জটিল অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয়। এ কারণে বাচ্চাগুলোর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা কম থাকে।