নীলফামারীর জলঢাকায় শ্যালিকাকে ধর্ষণে চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে গলা কেটে হত্যাচেষ্টায় দুলাভাই বেলাল হোসেনের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে মামলা করেছে ভুক্তভোগির বাবা।
বেলাল হোসেন জলঢাকা উপজেলার গোলনা ইউনিয়নের চিড়াভিজা গোলনা বড় জুম্মাপাড়া এলাকার আজিজুল ইসলামের ছেলে। মঙ্গলবার (১১ জুলাই) বিকালে জলঢাকা থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। জলঢাকা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোক্তারুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে রোববার (৯ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শ্যালিকাকে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা করেন বেলাল হোসেন (দুলাভাই)।
ভুক্তভোগীর বাবা বলেন, ‘আমার জামাই আমার ছোট মেয়েটার সঙ্গে এ রকম আচরন করবে ভাবতে পারি নাই। এ ঘটনায় দ্রæত বেলালকে আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানাই।’
মামলার বিবরনে জানা যায়, কয়েকদিন ধরে পারিবারিকভাবে ওই কিশোরীর বিয়ের কথাবার্তা চলছিল। বিয়েতে রাজি ছিলেন না জামাই বেলাল হোসেন। এতে বিয়ের আলোচনায় ক্ষুদ্ধ ছিলেন বেলাল। ঘটনার দিন ভুক্তভোগির বাবা বাজারে অবস্থান করায় বেলাল মেয়েটিকে বাড়ির পেছনে ডাক দিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। পরে ব্যর্থ হয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কিশোরীর গলা ও গাল কেটে দিয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় মেয়েটির চিৎকারে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে জলঢাকা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক কিশোরীর অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে পাঠান। বর্তমানে সে সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
ভুক্তভোগীর বড় বোন বলেন, আমার বিয়ের ছয় বছর হয়। আমাদের একটা বাচ্চা আছে। আমার স্বামীর সঙ্গে বোনের কোনো দিন খারাপ কিছু দেখি নাই। ফোনেও স্বাভাবিকভাবে কথা বার্তা বলে। আগে যদি জানতাম বাধা দিতাম। আমার স্বামী এমন কাজ করবে বিশ্বাস করতে পারছি না। আমি তার বিচার চাই।
প্রতিবেশী সুমন ইসলাম বলেন, যে ঘটনাটা ঘটেছে একজন সুস্থ্য মানুষ একাজ করতে পারেনা। এটা কল্পনাও করা যায় না। দুলাভাই শালি ভাইবোন সম্পর্ক। আমি কেন এলাকাবাসি জানে তার দুলাভাই এই কাজটা করেছে। ঘটনার সঙ্গে যেই জড়িত থাক তাকে দ্রæত গ্রেফতারের করে আইনের আওতায় আনা হউক ।
ভুক্তভোগির দাদি বলেন, মেয়েটার বিয়ের আলাপ চলছে এক প্রকার ঠিকঠাকের মতো। বিয়েতে আমার নাতি জামাইয়ের মতামত ছিলনা। ঘটনার দিন পরিববারের সবাই বাহিরে থাকায় মেয়েটাকে বাড়ীর পিছনে ডাক দিয়ে নিয়ে যা করেছে তা বলার মতো নয়। আমার নাতনির জীবনটাই শেষ করে দিলো বেলাল। আমি এর কঠিন শাস্তি চাই।
জলঢাকা থানার ওসি মোক্তারুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মেয়েটাকে (ভুক্তভোগিকে) ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। পরে ধর্ষনের চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে এক পর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার গাল ও গলা কেটে দিয়ে পালিয়ে যায়। মেয়েটি অসুস্থ হয়ে রমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় তার বাবা একটি মামলা করেছেন। আমরা (বেলালকে) আসামিকে ধরার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।