আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামের মাঠে নামে বাংলাদেশ দল। টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে শুরু থেকেই টাইগাররা উইকেট হারাতে শুরু করে।
বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে শেষ দিকে তাওহিদ হৃদয়ের ফিফটিতে ৪৩ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৬৯ রানের পুঁজি পায় তামিম বাহিনী। পরে ডিএসএল মেথডে আফগানদের সামনে লক্ষ্য দাড়ায় ১৬৪ রান। এই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হওয়া পর্যন্ত আফগানদের সংগ্রহ ২ উইকেট হারিয়ে ৮৩ রান।
বৃষ্টির কারণে ম্যাচ আর শুরু না হলে সফরকারী আফগানরা বৃষ্টি আইনে ( ডিএলএস পদ্ধতিতে) ১৭ রানে ম্যাচ জিতে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল। ৮ জুলাই একই ভেন্যুতে দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে।
আফগানদের ধবলধোলাই করে ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ের সেরা পাঁচে উঠার লক্ষ্য নিয়ে বুধবার মাঠে নামে তামিম ইকবালের দল। বৃষ্টির ভয় আগে থেকেই ছিল। দুই দফা বৃষ্টিতে সোয়া দুই ঘণ্টা খেলা হয়নি। তাতে ওভার কমে ম্যাচ হয়ে যায় ৪৩ ওভারের।
বৃষ্টি বিরতিতে খেলা শুরুর পর দাপট দেখায় আফগানিস্তানের বোলাররা। শুরু থেকে রক্ষণাত্মক খেলেও একে একে সাজঘরের দিকে ফিরতে থাকে টাইগার ব্যাটাররা। চোট নিয়ে মাঠে নামা টাইগার ওপেনার ও অধিনায়ক তামিম ইকবাল সপ্তম ওভারে দলীয় ৩০ রানে ফজলহক ফারুকীর শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরেন।
তিনি করেন ২১ বলে ১৩ রান। তামিমের বিদায়ের পর উইকেটে আসেন দারুণ ফর্মে থাকা নাজমুল হোসেন শান্ত। দ্বিতীয় উইকেটে ওপেনার লিটন দাসের সঙ্গে গড়েন ৩৫ রানের জুটি। ক্রিজে থিতু হয়েও ফিরে সাজঘরে ফেরেন লিটন। ইনিংসের ১২তম ওভারে আফগান স্পিনার মুজিবুর রহমানের বলে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দেন এই ওপেনার। সেই ক্যাচ সহজেই লুফে নেন রহমত শাহ।
আউট হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৩৫ বলে ২৬ রান। লিটনের আউটের দুর্ভোগ কাটাতে না কাটাতেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন শান্ত। টাইগার শিবিরে আঘাত হানেন আফগান স্পিনার মোহাম্মদ নবি। ১৬ বলে ১২ রান করে থামে এই টপ অর্ডার ব্যাটারের ইনিংস।
আফগান বোলারদের তোপের মুখে থিতু হয়েও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি সাকিব আল হাসান। ৩৮ বলে ১৫ রানের ইনিংস খেলে তিনি আজমতউল্লাহ উমরজাইয়ের বলে আউট হয়ে সাজঘরের পথ ধরেন। মুশফিকুর রহিম আউট হন ৩ বলে ১ রান করে।
দীর্ঘদিন পরে দলে সুযোগ পেয়ে আফিফ ফেরেন ৮ বলে ৪ রানে। অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ ২৩ বল খেলে ৫ রানে আউট হন। ব্যাটারদের আশা যাওয়ার মিছিলে ম্যাচের ৪১ ওভার পর্যন্ত রক্ষণাত্মক খেলে টিকে ছিলেন তাওহিদ হৃদয়। তিনি ৬৭ বলে ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটি পূরণ করেন। তার ফিফটির উপর ভর করে বাংলাদেশ ১৬৯ রানের সংগ্রহ পায়। শেষ দিকে তাসকিন আহমেদের ব্যাট থেকে আসে ১৯ বলে ৭ রান।
হাসান মাহমুদ অপরাজিত থাকেন ১৭ বলে ৮ রান করে। আর মোস্তাফিজুর রহমান অপরাজিত থাকেন ১১ বলে ৩ রানে। আফগানদের হয়ে ২৪ রান খরচায় সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট নেন ফজলহক ফারুকী। ২৩ রানে ২টি উইকেট নেন মুজিব উর রহমান। ২১ রানে ২ উইকেট নেন রশিদ খান। এছাড়া ১টি করে উইকেট নেন আজমতউল্লাহ ওমরযাই ও মোহাম্মদ নবী।
ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দারুণ শুরু করে আফগানরা। দলকে জয়ের দাড়প্রান্তে নিয়ে যান দুই ওপেনার রাহমানুল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান। শুরু থেকেই দেখেশুনে খেলতে থাকে তারা। দলীয় ৫৪ রানে প্রথম উইকেট হারায় তারা। সাকিবের বলে আউট হন ওপেনার গুরবাজ।
তার ব্যাট থেকে আসে ৪৫ বলে ২২ রান। আরেক ওপেনার ইব্রাহিমের সঙ্গে ক্রিজে ছিলেন রহমত শাহ। তিনি তাসকিন আহমেদের বলে কট বিহাইন্ড হয়ে ৮ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে যান। শেষ পর্যন্ত ইব্রাহিম ৪১ ও অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহিদী ৯ রানে অপরাজিত ছিলেন।