নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রুকন ফজলুর রহমানের রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার (২৪ জুন) দুপুর ২ টায় উপজেলার কাশিরাম ইউনিয়নের সাতপাই উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ মাঠে তাঁর জানাজা আদায় শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

এর আগে সৈয়দপুর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মরহুমের কফিন জাতীয় পতাকা এবং মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের পক্ষ থেকে সংগঠনের পতাকা আচ্ছাদন করাসহ প্ষ্পুমাল্য অর্পণ করা হয়। এসময় পুলিশের একটি চৌকষ দল গার্ড অব অনার প্রদান করেন। এতে নেতৃত্ব দেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আমিনুল ইসলাম, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মফিজুল হক।

জানাজার আগে বক্তব্য রাখেন এসিল্যান্ড ও ওসি (তদন্ত) সহ মরহুমের সহযোদ্ধা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কার্যালয়ের প্রাক্তন ডিপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সামসুল হক, সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার সহকর্মী বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউনুস আলী চৌধুরী, এলাকার ছোটভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোখলেছুর রহমান, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সৈয়দপুর উপজেলার আমীর নীলফামারী জেলা মজলিসের সুরা সদস্য ও নীলফামারী ৪ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য হাফেজ আব্দুল মুনতাকিম, কাশিরাম বেলপুকুর ইউপি চেয়ারম্যান লানছু হাসান চৌধুরী, বড় নাতি ফজলে বারী, আল-ফারুক একাডেমির প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী শহর আমীর শরফুদ্দিন খান, সৈয়দপুর উপজেলার সাবেক আমীর গোলাম মোস্তফা বিএসসি, বোতলাগাড়ী ইউনিয়ন জামায়াতে আমীর আনিছুর রহমান মন্টু, কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়ন জামায়তের আমীর মাষ্টার খায়রুল আলম, খাতামধুপুর ইউনিয়ন জামায়তের আমীর মাষ্টার আব্দুর আলেম, বাঙ্গালীপুর ইউনিয়ন জামায়তের আমীর জয়নাল আবেদীন ।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার প্রোডাকশন সপের কর্মচারী ছিলেম। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ডাকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীনে অবদান রেখেছেন বলে জানান বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউনুস আলী চৌধুরী।

উপজেলা জামায়াতের আমীর হাফেজ আব্দুল মুনতাকিম বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান আমার ফুফা।তিনি রাজনৈতিকভাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাথে আজীবন সম্পৃক্ত ছিলেন। ১৯৯০ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত কাশিরাম ইউনিয়নের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৪ সালের ১৪ এপ্রিল রুকন হিসেবে শপথ গ্রহন করেন। মৃত্যু পর্যন্ত তিনি উপজেলা ইউনিট সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোখলেছুর রহমান বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান সম্পর্কে আমার বড় ভাই। তিনি অত্যন্ত বিনয়ী ও ব্যক্তিত্ববান মানুষ ছিলেন। সকলের সাথে তাঁর সুসম্পর্ক ছিল। চাকুরী থেকে অবসরের পর প্রায় ১২ বছর থেকে অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

শনিবার ভোর তিনি মারা যান। মৃত্যকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর তিনি স্ত্রী, ২ মেয়ে, জামাই ও ৬ নাতি সহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। মরহুমের ছোট নাতি মো. ফারহান জানাজা পড়াশ। জানাজায় এলাকাবাসী, মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, জামায়াতের নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্তরের লোকজন উপস্থিত ছিলেন।