আসন্ন কোরবানীর ঈদ উপলক্ষে নীলফামারীতে দুই লাখ ৯৮৯ গবাদী পশু প্রস্তত করা হয়েছে। জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোনাক্কা আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর মধ্যে সদরে ১৫ হাজার ৪৯৮, সৈয়দপুরে নয় হাজার ৬৭২, ডোমারে ১১ হাজার ১৩১টি, ডিমলায় ১১ হাজার ৭১৩, জলঢাকায় ১৪ হাজার ৫৩০ ও কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ১২ হাজার ১৫৮টি গবাদী পশু রয়েছে।
অপরদিকে, জেলায় মোট খামারী রয়েছে ৩০হাজার ৬৮৮ জন। এরমধ্যে সদরে পাঁচ হাজার ৭২৫, সৈয়দপুরে চার হাজার ২৬৯, ডোমারে চার হাজার ৬৯৬, ডিমলায় চার হাজার ৮৭৯, জলঢাকায় পাঁচ হাজার ৯৯২ ও কিশোরগঞ্জে পাঁচ হাজার ১২৭ জন।
২০২২ সালে কোরবানীর ঈদে জেলায় ৭৪ হাজার ৭২৫টি গবাদী পশু কোরবানীর জন্য প্রস্তত ছিল। এরমধ্যে সদরে ১৫ হাজার ৪৯৫, সৈয়দপুরে ৯ হাজার ৬৬৯, ডোমারে ১১ হাজার ১২৪, ডিমলায় ১১ হাজার ৭৬৯, জলঢাকায় ১৪ হাজার ৫১৪ ও কিশোরগঞ্জে ১২ হাজার ১৫৪ টি গরু। অপরদিকে, গরুর খামারী রয়েছেন, ১৭ হাজার ৫৯৬ জন।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত বছরের চেয়ে এবার জেলায় উর্দ্ধৃত গবাদী পশুর সংখ্যা এক লাখ ২৬ হাজার ২৬৪ টি। অপরদিকে, অতিরিক্ত ১৩ হাজার ৯২ জন খামারী ওই পশু প্রস্তত করেন।
জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা বলেন, প্রাকৃতিক উপায়ে খড়, ঘাস, খৈল, চালের কুড়া ও ভূষি খাইয়ে গরু মোটাতাজা করছেন খামারীরা। প্রস্ততকৃত গবাদী পশু সর্বক্ষনিক তদারকি করছেন, জেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগের কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, ওষুধের অপব্যবহার, রাশায়নিক খাবার বর্জন, এ ব্যাপারে খামারীদের নানাভাবে পরামর্শ দিয়ে আসছে। পাশাপাশি, রোগাক্রান্ত পশু কিংবা কোরবানীর অনুপযোগি পশু ক্রয় বিক্রয় না করার পরামর্শ দিচ্ছেন। উপজেলা ভিত্তিক একটি করে মনিটারিং টিম গঠন করা হয়েছে। এতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, প্রত্যেক উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা।
জেলা শহরের হাজি মহসিন সড়কের পাশেই বেলাল মিয়ার খামারে দেখা গেছে, ‘ঈদুল আজহা উপলক্ষে প্রায় ৩৫ গরু দেশীয় পদ্ধাতিতে মোটাতাজা করা হচ্ছে। এবারে ভারতের গরু ছাড়াই আমাদের দেশীয় গরু দিয়ে কোরবানীর হাট গুলো কানায়, কানায় ভরে যাবে। প্রচুর গরু রয়েছে খামারীদের কাছে।’
সদরের ইটাখোলা ইউনিয়নের সিংদই গ্রামের আবুল কালাম বলেন, ‘এবার কোরবানীর জন্য দেশীয় প্রজাতীর ২০ টি গরু পালন করেছি। তবে খাদ্যের দাম (খড়, ঘাস ক্রয়) ও কাজের লোকের হাজিরা সবমিলে একটি গরুর পিছনে যে ব্যয় হয় তা পুষিয়ে নিতে হিমশিম খেতে হবে।’
একই এলাকার গরু ব্যবসায়ী মো. আতিয়ার রহমান বলেন, ‘গত বছর করোনাকালিন সময়ে যে হারে গরু বিক্রি হয়েছে তার চেয়ে এবারে দ্বিগুন গরু কেনা বেচা হবে। এতে খামারী ও ব্যবসায়ী উভয় লাভবান হবে।’
উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুর রাজ্জাক জানান, ‘এবার সদরে গবাদী পশু প্রস্তত আছে ১৫ হাজার ৪৯৮টি। আশা করি, এই ঈদে গবাদী পশুর সংকট পড়বেনা। এতে খামারী ও ব্যবসায়ী উভয় লাভবান হবেন।’
জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা বলেন, ‘দেশীয় পদ্ধাতিতে মোটাতাজাকরন জেলায় প্রায় দুই লাখ ৯৮৯ হাজার পশু প্রস্তত করা হয়েছে। এবারে ঈদুল আজহায় কোরবানীর পশুর ঘাটতি হবেনা। তুলনামুলকভাবে গত বছরের চেয়ে এবারে খামারী ও গৃহস্থবাড়ীতে দ্বিগুন পশু প্রস্তত রয়েছে।’