জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে দেশের মানুষের কষ্ট হচ্ছে উল্লেখ করে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার (২০ জুন) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সভাপতিত্বকালে সরকারপ্রধান এই নির্দেশনা দেন।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা।
সভা-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার কথা তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। ব্রিফ্রিংয়ে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, পরিকল্পনা সচিবসহ পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, আজকের সভায়ও মূল্যস্ফীতি কমাতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, সবার দায়িত্ব এর বিরুদ্ধে ফাইট করা, এটি কমাতে হবে, সেটি বলেছেন।
পরিকল্পনা মন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, জুন মাসে আশা করি মূল্যস্ফীতি কমে আসবে। এসময় তিনি বলেন, চালের দাম বাড়ছে না, আমার গ্রামেও খোঁজ নিয়েছি, কোনো কোনো মোকামে মোটা চালের দাম কমেছে। রিজার্ভ স্থিতিশীল পরিবেশে পৌঁছেছে, এখন এটিকে উপরে নিয়ে যেতে আমরা পারব।
প্রধানমন্ত্রীর অন্যান্য নির্দেশনা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, সোলারের একটি প্রকল্প পাস হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সোলারে জোর দিতে বলেছেন। এছাড়াও সোলার যেখানে করা হয় সেই জায়গাটা লম্বায় বাড়িয়ে দিয়ে নিচে সবজি করা যায় কি না সে বিষয়ে কৃষিমন্ত্রীকে নির্দেশনা দিয়েছেন। এছাড়াও বেসরকারিভাবে সোলারের ক্ষেত্রে সার্বিক সহযোগিতার কথা বলেছেন, যাতে মানুষ সোলারে এগিয়ে আসে।

মন্ত্রী বলেন, বজ্রপাতে খোলা জায়গায় মানুষ মারা যায়। বড় বড় হাওরে অনেক খোলা জায়গা। তাই হাওরে শেড বানানো যায় কি না সে বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।

এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী সরকারি অফিসে জমির ব্যবহার কমাতে নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানান মন্ত্রী।
এম এ মান্নান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সম্প্রতি সফল সুইজারল্যান্ড সফরের জন্য আমরা অভিনন্দন জানিয়েছি। আমরা সম্প্রতি যে বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস ফল প্রকাশ করেছি সেটি মোটাদাগে অবহিত করেছি। আমরা ওই ফলাফলের তথ্য ধরে বলেছি, গৃহহীনদের সংখ্যা কমেছে, নিরাপদ খাবার পানি ব্যবহার বেড়েছে, নিরাপদ টয়লেট ব্যবহার বেড়েছে, স্বাক্ষরতা বেড়েছে, গড় আয়ু বেড়েছে এসব জানিয়েছি প্রধানমন্ত্রীকে। সারাদেশে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে গৃহহীন কমেছে, এজন্য প্রধানমন্ত্রীকে এমন প্রকল্প নেওয়ার জন্য অভিনন্দন জানিয়েছি। আমরা গরিব মানুষের সাথে সম্পৃক্ত প্রকল্প আগেও নিয়েছি, ভবিষ্যতেও নেব।
আজকের একনেক সভায় ২৪ হাজার ৩৬২ কোটি ১৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৬টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে পাওয়া যাবে ১২ হাজার ৮৭৩ কোটি ১১ লাখ টাকা। বৈদেশিক সহায়তা হিসেবে ১১ হাজার ৪৭২ কোটি ৮৮ লাখ টাকা এবং প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা থেকে পাওয়া যাবে ১৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা।