সিটি ব্যাংকের নীলফামারীর সৈয়দপুর শাখার গ্রাহকের অগোচরে তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে ৩৪ লাখ টাকা উধাও হওয়ার অভিযোগ ওঠেছে। কর্মকর্তারা গোপনে এই টাকা প্রায় ১ বছর আগেই তুলে তষরুপ করেছে। গত বৃহস্পতিবার ভুক্তভোগী গ্রাহক মোছা: শরিফা (৪০) টাকা তুলতে গেলে বিষয়টি জানতে পারেন। এরপরই তিনি তাঁর অ্যাকাউন্টের টাকা উধাও হওয়ার বিষয়টি ও এর প্রতিকার চেয়ে ব্যাংক ব্যাবস্থাপককে লিখিতভাবে আবেদন করেন। এছাড়া জালিয়াতির সাথে জড়িত ব্যাংকটির এক কর্মকর্তাকে পাকরাও করে ওইদিন রাত ৯ টা পর্যন্ত ব্যাংক ব্যবস্থাপকের চেম্বারে অবরুদ্ধ করে রাখেন ভুক্তভোগী গ্রাহক ও তার স্বজনরা। নানা টালবাহানা শেষে পরে ব্যবস্থাপক টাকা ফেরত দেয়ার দায়িত্ব নেওয়ার প্রেক্ষিতে পরিস্থিতি শান্তহয়।
ভুক্তভোগী শরিফা সৈয়দপুর শহরের হাতিখানা বানিয়াপাড়া এলাকার বিশিষ্ট চাল ব্যবসায়ী মৃত ইদ্রিস আলীর কনিষ্ঠ মেয়ে।
লিখিত আবেদন সূত্রে জানা যায়, মোছা: শরীফা সিটি ব্যাংকের সৈয়দপুর শাখায় ৩০ লাখ টাকার ফিক্সড ডিপোজিট রিসিট (এফডিআর) অর্থাৎ স্থায়ী আমানত হিসাব খোলেন। বাবার সম্পত্তি ও নিজের গহনা বিক্রি করে গত ২০২২ সালের ১০ নভেম্বর ওই এফডিআর করেন তিনি। যার নং ২২২৩১৫১২০৭০০১। এরপর চলতি বছরে নেওয়া ব্যাংকের স্টেটমেন্ট অনুযায়ী ওই হিসাব নাম্বারের বিপরীতে মোট ৩৩ লাখ ২৩ হাজার ২৩০ টাকা ৫৭ পয়সা জমা আছে তাঁর। উল্লেখিত দিনে পারিবারিক প্রয়োজনে এফডিআর ভেঙে টাকা তুলতে গেলে তাঁকে ব্যাংক থেকে শরিফাকে জানানো হয় ওই হিসাব নাম্বারের অনুকুলে কোন টাকাই নেই। এফডিআর করার মাত্র এক মাসের মধ্যেই তা ভেঙে ফেলা হয়েছে। একথা শুনে হতবাক হন তিনি। পরে ব্যাংকের যে কর্মকর্তার মাধ্যমে এফডিআর করেছিলেন তার কাছে বিষয়টা জানতে চান শরিফা। ব্যাংকের ঋণ শাখার দায়িত্বরত কর্মকর্তা ইসতেকুর ইসলাম সেতু প্রথমে অস্বীকার করে ও সঠিক তথ্য দিতে গড়িমসি করতে থাকে। বাধ্য হয়ে বিষয়টা আত্মীয়-স্বজন ও সাংবাদিকদের জানান শরিফা । এতে সেতু গা ঢাকা দেয়। এরপর গোপনে শহরের কাজীপাড়াস্থ ভাড়া বাসা থেকে জিনিসপত্র নিয়ে সটকে পড়াকালে তাঁকে ধরে ব্যাংকে আনা হয়।
এ বিষয়ে সেতুর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ভুল করেছি। এতে ব্যাংকের কোন ত্রুটি নেই। আমিই টাকাটা কৌশলে সরিয়েছি। তিনি আরও বলেন, আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। কয়েকজন মিলে এ অপকর্ম করলেও দায় আমার ঘাড়েই চেপেছে। যিনি মূল খলনায়ক তিনি পার পেয়ে গেলন।
সিটি ব্যাংক সৈয়দপুর শাখার ব্যবস্থাপক সুলতান মাহবুব খান বলেন, এবিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। আমি মাত্র ১০ মাস হলো এই শাখায় এসেছি। আর এফডিআর করা হয়েছে ২০২২ সালে। সেই সময়কার ম্যানেজার রেজোয়ান করিম ও সেতুই ভালো বলতে পারবে। তবে টাকা ফেরত পাওয়ার ব্যাপারে গ্রাহককে সার্বিক সহযোগিতা করার কথা জানান তিনি।