নীলফামারীর জলঢাকায় প্রশাসনিক অনুমতি ছাড়াই ১নং খাস খতিয়ানভুক্ত সরকারি পুকুর নাটাই বিলের প্রকৃতি ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট করার অপরাধে মাটি খনন কাজে ব্যবহৃত একটি “ভ্যাকু গাড়ি” জব্দ করেছে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)। জব্দের সময় নাটাই বিল সাব-ইজারা নেয়া মতিউর রহমান ও তার লোকজন প্রশাসনের কর্তাদের বিভিন্নভাবে গালমন্দ এবং হুমকি প্রদান করেন। তবে এ কাজের সাথে জরিত নাটাই বিল ইজারা নেওয়া পশ্চিম খুটামারা(খামাতপাড়া) মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির কাউকে আটক করতে পারেনি। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৪ দিন অতিবাহিত হলেও প্রকৃত অপরাধীরা ধরা ছোয়ার বাহিরে আছে বলে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ মে) বিকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিন্নাতুল ইসলাম এর আদেশে খুটামারা ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা সরকারি নাটাই বিলে এ অভিযান পরিচালনা করেন। খুটামারা ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা রেজাউল হক বলেন, “এসিল্যান্ড স্যারের নির্দেশে আমি এখানে এসেছি। আমাকে যে মোশানটা দেখাইল, কালো করি লোকটা। কঠিন ব্যাপার। লোকটা আমাকে বলতেছে, আমি ইউএনও’র ভাই। আমি ইউএনও’র সাথে কথা বলবো। আমি এসিল্যান্ডের সাথে কথা বলবো না। স্যার অফিস থেকে একজনকে পাঠিয়েছে, ওনি এখানে আসা মাত্র তাকে ভ্যাকু গাড়িটি বুঝে দিয়ে চলে যাবো”। কালো লোকটার বিষয়ে জানা যায়, সাব-লিজ নেয়া মতিউর রহমানের লোক টেকনিশিয়ান, বাড়ি নওগা জেলায়।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, ভেকুটি উদ্ধারের জন্য বিভিন্ন মহলের চলছে নানান তদবির। এছাড়াও ভ্যাকুটি জব্দের পর নামে মাত্র একটি মৎস্য জীবী সমিতির সদস্যরা নাটাই বিলের বাঁধ সংস্কারের জন্য অনুমতি চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত আবেদন জমা দিয়েছেন। 

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিন্নাতুল ইসলাম বলেন, অনুমতি না নিয়ে খুটামারা ইউনিয়নের সরকারী নাটাই বিলের কাজ ভ্যাকু দিয়ে করতে ছিল ইজারা নেয়া সমিতির লোকজন। তারাই মুলত কাজ করার জন্য ভ্যাকু লাগিয়েছে। তারা সরকারি কোন নিয়ম মানেনি। তাই ভ্যাকু গাড়ি আটক করে জব্দ করা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ভ্যাকু গাড়ির জন্য কোন লোক আমার কাছে আসেনি। ভ্যাকু গাড়ির লোকজন আসলে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করার চেষ্টা থাকবে। আর কেউ যোগাযোগ না করলে নিলামের অর্ডার দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, সরকারী পুকুর সংস্কারের জন্য কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করতে হয়। এরপর সংস্কারের প্রয়োজন মনে হলে সরকার অনুমতি দিয়ে পুকুর সংস্কার করে দেয়। কিন্তু সরকারি পুকুরের প্রকৃতি নষ্ট বা সরকারি সম্পদ নষ্ট করা একধরনের অপরাধ। যারা এটা করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ময়নুল ইসলাম জানান, খবর পাওয়ার পর ভ্যাকু জব্দ করা হয়েছে।