আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগে তিনে থেকে শেষ করেছে বাংলাদেশ। ১৫৫ পয়েন্ট নিয়ে আছে তৃতীয় স্থানে। নিজেদের পরিকল্পনায় বাংলাদেশ সফল। এই প্রতিযোগিতায় সেরা চারে থাকার চ‌্যালেঞ্জ নিয়েছিলেন তামিম। তিনে জায়গা পাওয়ায় খুশি বাংলাদেশের অধিনায়ক।

কিন্তু বিশ্বকাপ বছরেও দলের কম্বিনেশন ঠিক না হওয়াতে তার চিন্তার শেষ নেই। ছয় ও সাত নম্বর পজিশন নিয়েই ছিল তার যত চিন্তা। ছয় নম্বর ব‌্যাটিং পজিশনে মুশফিকুর রহিম থিতু হওয়ায় তামিমের মাথা থেকে বিশাল বোঝা নেমেছে ঠিকই কিন্তু সাত নম্বরে কাকে খেলাবেন তা এখনও ঠিক না হওয়াতে দুশ্চিন্তার ভাজ তার কপালে।

গত কয়েক ম্যাচ ধরেই মেহেদী হাসান মিরাজকে সাত নম্বরে খেলিয়ে আসছে বাংলাদেশ। কিন্তু ওই পজিশনে প্রয়োজন বিশেষজ্ঞ ব‌্যাটসম‌্যান। বাড়তি স্পিনার না নিয়ে খেললে মিরাজকে আটে খেলানোও সম্ভব। কারণ মিরাজের বোলিংয়ের সঙ্গে ব‌্যাটিংও বেশ কার্যকরী। সেখানে নাম্বার সেভেনে একজন বিশেষজ্ঞ ব‌্যাটসম‌্যানই প্রয়োজন। আর সেই তালিকায় বিশ্বকাপ স্কোয়াডে জায়গা পেতে লড়াইয়ে আছেন তিনজন। ইয়াসির আলি চৌধুরী রাব্বী, আফিফ হোসেন ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

ইয়াসির আয়ারল‌্যান্ড সিরিজে দলের সঙ্গে ছিলেন। কোনো ম‌্যাচ খেলার সুযোগ পাননি। তবে পরিবর্তিত খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নেমে রেখেছেন অবদান। আফিফ ও মাহমুদউল্লাহ দলের বাইরে। দুজনকে নিয়ে আলোচনাও হচ্ছে বেশ। আনুষ্ঠানিক বক্তব‌্য অনুযায়ী, আফিফকে বাদ দেওয়া হয়েছে। মাহমুদউল্লাহকে রাখা হয়েছে বিশ্রামে।

ওয়ানডে অধিনায়ক জানিয়েছেন, এই তিনজন থেকে যে কোনো একজনকেই বিশ্বকাপের চূড়ান্ত দলে নেওয়া হবে। ইয়াসিরকে বাজিয়ে দেখার কথা ছিল। কিন্তু মিডল অর্ডার ব‌্যাটসম‌্যান সুযোগই পাননি আয়ারল‌্যান্ডের বিপক্ষে অ‌্যাওয়ে সিরিজে। তাকে যদি স্কোয়াড থেকে বাদ দেওয়া হয় কোন প্রক্রিয়ায় বাদ দেওয়া হবে তা নিয়ে বিরাট প্রশ্ন উঠবে।

পারফরম‌্যান্সের কারণে আফিফকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। সেই আফিফ ঢাকা লিগে ফিরে নিজেকে মেলে ধরেছেন এমনভাবে যে, তাকে না ফেরানো হবে বিস্ময়কর। ১৩ ইনিংসে ৫৫ গড়ে ৫৫০ রান করেছেন। শনিবার অঘোষিত ফাইনালে শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাবের বিপক্ষে ৬০ রানের ইনিংস খেলে দলকে দিয়েছেন ২২তম শিরোপার স্বাদ। দলের কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন তাকে বিশ্বকাপ দলে রাখার দাবিও তুলেছেন।

অন‌্যদিকে পরীক্ষিত মাহমুদউল্লাহকে বিশ্রামের আদলে বাদ দেওয়া হয়েছে পারফরম‌্যান্সের কারণেই। ঢাকা লিগে তার পারফরম‌্যান্স খুব একটা আশাব‌্যাঞ্জকও নয়। করেছেন কেবল ৫১০ রান।  বিশ্বকাপ স্কোয়াডের ১৫ জনের জায়গা প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গেছে। এক-দুটি জায়গা নিয়ে দোলাচল। সেটা শিগগিরিই সমাধানের আশ্বাস তামিমের।

বিশেষ করে সাত নম্বর পজিশন নিয়েই তার যত কথা, ‘এখনো (বিশ্বকাপের) এক দুটি জায়গা নিয়ে ভাবছি আমরা। আফিফ আছে, ইয়াসির আছে, রিয়াদ ভাই আছেন। যে সবচেয়ে মানানসই হবে, তাকে বিবেচনা করা হবে। অবশ্যই রিয়াদ ভাইয়ের অভিজ্ঞতা বড় ব্যাপার। আফিফের এমন কিছু আছে, যা খুব বেশি বাংলাদেশি খেলোয়াড়ের মধ্যে নেই। ওর ব্যাটিং আমি উপভোগ করি। ইয়াসিরের ক্ষেত্রেও একই কথা। আমি এখনো কিছু ঠিক করে রাখিনি। এশিয়া কাপ এলে বুঝে নিতে পারবেন, বিশ্বকাপের দল কেমন হবে।’

ইয়াসির, আফিফ নাকি মাহমু্দউল্লাহ। কে হবে সাত নম্বরের লাকি সেভেন? উত্তরটা জানতে কিছুদিন অপেক্ষা করতেই হবে।