নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় লাম্পি স্কিন ভাইরাস রোগে গরুর মড়ক দেখা দিয়েছে। এ রোগে হাজার হাজার গরু আক্লান্তের খবর পাওয়া গেছে। গত এক সপ্তাহে এক গ্রামেই ৬ টি গরু মারা গেছে । আক্রান্ত গরু নিয়ে খামারি ও কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। প্রতিটি গরুর চিকিৎসা খরচ ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা হলেও কোন ফলাফল পাচ্ছেনা তারা। গরু খামারী ও কৃষকদের অভিযোগ প্রাণীসম্পদ দপ্তরের অবহেলার কারনে ওই রোগে গরুমৃত্যুর হার দিন দিন বেড়েই চলেছে। এদিকে ভাইরাসে আক্লান্ত গরুর মাংশ বিভিন্ন হাটবাজারে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগ মহামারি আকার ধারন করেছে। গত এক সপ্তাহে শুধুমাত্র একটি গ্রামেই ৬ টি গরুর মৃত্যু হয়েছে। গরুর মালিক ও খামারীদের কাছ থেকে জানা গেছে, এনজিও থেকে লোন নিয়ে অনেক কৃষক কোরবানির ইদের জন্য গরুগুলো প্রস্তুত করেছিলেন। হঠাৎ গরুগুলো ভাইরাসে আক্লান্ত হওয়ার পর ধীরে ধীরে গরুগুলো মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে। কৃষকরা জানিয়েছে এই মহাবিপদে প্রাণীসম্পদ বিভাগের কারো কোন সহায়তা না পাওয়ায় প্রশিক্ষন প্রাপ্ত গ্রাম্য ডাক্তার দিয়ে গরুর চিকিৎসা করাতে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা করে লাগলে গরু বাঁচাতে পারেননি তারা।
বাহাগিলি ইউনিয়নের উত্তর দুরাকুটি পশ্চিমপাড়া গ্রামের গরু খামারী রবিউল ইসলাম বলেন, আমার একটি বিদেশী জাতের গরু কয়েকদিন আগে ভাইরাসে আক্লান্ত হয়। প্রথমে গরুটির প্রচন্ড জ্বর হয়। তাঁরপর সমস্ত শরীরের নিচে ফোসকা ও গুটি গুটি আকার ধারন করে। এক পর্যায়ে গরু খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দিয়ে আস্তে আস্তে নিস্তেজ হয়ে মুত্যুর কোলে ঢলে পরে। আমার গরুটির আনুমানিক মুল্যু ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। গরুটির চিকিৎসা করাতে আমার ১৯ হাজার টাকা ব্যায় হয়েছে তবুও গরুটিকে বাঁচাতে পারিনি। গত কালকে গরুটি মারা গেছে। ওই গ্রামে ভাইরাসে আক্লান্ত হয়ে কালা মিয়ার ৪০ হাজার টাকা দামের একটি ও দিনমজুর ওলিয়ার রহমানের ৮০ হাজার টাকা মুল্যেুর একটি গরুসহ তিনটি গরু মারা গেছে।
একই ওয়ার্ডের জয়নন কোর্ট গ্রামে গিয়ে জানা গেছে , ওই গ্রামে নুরুল হকের দুইটি, মজিদুল ইসলামের একটি ও সাইদুল ইসলামের একটিসহ তিনটি গরু মারা গেছে। গরুর মালিক মজিদুল ইসলাম জানান, প্রাণীসম্পদ দপ্তরে বার বার ধর্না দিয়ে গরুর চিকিৎসা নিতে না পেরে স্থানীয় প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত ডাক্তারদের মাধ্যমে চিকিৎসা নিয়ে একদিকে হাজার হাজার টাকা ব্যায় করলাম অপরদিকে ৮০ হাজার টাকা মূল্যমানের গরু হাড়িয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েিেছ। এক কথায় মরার উপরে খারার ঘাঁ।
প্রাণী সম্পদ দপ্তরে চিকিৎসা নিতে আসা পুটিমারী ইউনিয়নের গরুর মালিক সাজেদুল ইসলাম জানান, আমি গত দুইদিন থেকে ভ্যানে করে অসুস্থ গরু নিয়ে চিকিৎসার জন্য আসছি কিন্তু কোন ফল পাচ্ছিনা। উল্টো ভ্যান ভারা ও চিকিৎসা বাবদ হাজার হাজার টাকা ব্যায় হচ্ছে। সরকারীভাবে কোন ওষুধ পাচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ডাক্তার গরুর জন্য ওষুধ লিখে দেন তা বাইরে থেকে কিনতে হয়।
এ বিষয়ে ভ্যাটেরেনারী সার্জন ডাঃ মোঃ নাহিদ সুলতান বলেন, এই রোগটি মোকাবেলা করতে হলে প্রথমে অসুস্থ গরু থেকে সুস্থ গরু আলাদা রাখতে হবে। উপযুক্ত ক্ষেত্রে মশারী ব্যবহারসহ গরু রাখার জায়গা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা নুরুল আজিজের কাছে এই রোগে কতগুলো গরুর মৃত্যু হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই রোগে গরু মুত্যুর বিষয়ে কোন তথ্য আমার জানা নেই। তবে তিনি ভাইরাস আক্লান্তের কথা স্বীকার করে বলেন, রোগটি প্রতিরোধে বিভিন্ন এলাকায় লিপলেট বিতরনসহ বিভিন্ন কর্মকান্ড অব্যহত রয়েছে। রোগটি মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে কিনা প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ওই রোগে আক্লান্ত গরু নিয়ে গরুর মালিকরা চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আসছেন তবে পরিমানে বেশি নয় কম । সে হিসাবে মহামারি বলা যাবেনা।
১৩ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে ল্যাব সহকারী পদে নিয়োগ, ভাগাভাগির তালিকা প্রকাশ্যে আসায় তোলপাড়
গর্ভনিং-বডির সভাপতিকে ম্যানেজ করে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়নের মাগুড়া দোলাপাড়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল খালেকের বিরুদ্ধে প্রায় ১৩ লক্ষ টাকা ঘুষ নিয়ে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।…