শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) অকেজো। তাই চিলাহাটি-খুলানা রুটে আন্ত:নগর রুপসা ও সীমান্ত ট্রেনের চারটি কোচ খুলে রাখা হয়েছে। কোচ চারটিতে মোট আসন রয়েছে ৩০২টি। অথচ কোচগুলো অলস হয়ে পড়ে আছে প্রায় এক মাস ধরে। ব্যাপক চাহিদা থাকা সত্ত্বেও এ রুটে যাত্রীদের কাছে আসনের বিপরীতে টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে না। এতে করে একদিকে যেমন ওই রুটে নীলফামারীর সৈয়দপুরসহ এ অঞ্চলের যাত্রীদের যাতায়াতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। অন্যদিকে সরকারকে লোকসান গুনতে হচ্ছে।
যাত্রীদের অভিযোগ, এ দীর্ঘ এ রুটে এসি কোচগুলো খুলে রাখায় চলাচলে তাদের এক মাস ধরে ভোগান্তি পোহালেও কর্তৃপক্ষ নীরব। সামনে ঈদুল আযহা। যদি কোচগুলো সংযুক্ত করা না হয় তাহলে ঘরমুখী যাত্রীদের চাপ সামলানো মুশকিল হয়ে পড়বে।
রেলওয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানায়, এ কোচগুলোর এসি ব্যবস্থা জটিল প্রকৃতির। এর যন্ত্রাংশ পাওয়ায় না যাওয়ায় নস্ট এসি স্থানীয়ভাবে মেরামত সম্ভব হচ্ছে না। তাই এগুলো খুলে রাখা হয়েছে।
তবে খোঁদ রেলওয়ে একটি সূত্রের দাবি রেলওয়ের ইলেকট্রিক বিভাগের ব্যর্থতার জন্য বিপুল অংকের রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ রেলওয়ে ২০০৬ সালে ব্রডগেজ লাইনের বেশ কিছু কোচ আমদানি করে। এগুলোর মধ্যে ছিল পাঁচটি এসি স্লিপার ও পাঁচটি এসি চেয়ার/স্নিগ্ধা। এসব কোচ চিলাহাটি-খুলনা রুটে চলাচলকারী আন্ত:নগর রুপসা ও সীমান্ত এক্সপ্রেস এবং রাজশাহী–খুলনা রুটে চলাচলকারী সাগড়দাড়ী রুটে এক্সপ্রেস ট্রেনে যুক্ত করা হয়। এ তিন জোড়া ট্রেনে পাওয়ার কার লোড নিতে পারে না এ অজুহাতে এতদিন দুইটার পরিবর্তে একটা করে এসি কোচ চলাচল করতো। এর মধ্যে সেই একটি করে চলাচলকৃত এসি কোচগুলোর এসি যন্ত্রে সমস্যা দেখা দেয়। তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে তা ঠান্ডা হয় না। ফলে রেলওয়ে বিভাগীয় বিদ্যুৎ প্রকৌশলী (পাকশি) রিফাত শাকিলের দেওয়া চিঠির নির্দেশনা অনুযায়ী গত ১৪ মে থেকে এসি কোচগুলো খুলে রাখা হয়। অর্থাৎ এ নিয়ে সর্বমোট দশটা এসি বগী অলস পড়ে আছে খুলনা, চিলাহাটী ও রাজশাহী স্টেশনে। এসবের মধ্যে চিলাহাটি-খুলনা রুটে রুপসা এবং সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেনে একটি করে এসি স্লিপার ও এসি চেয়ার/স্নিগ্ধাসহ মোট চারটি কোচ খুলে রাখা হয়েছে। যার মধ্যে দুটি এসি চেয়ার কোচে ৮০ টি করে ১৬০ টি, দুটি এসি স্নিগ্ধায় ৮৬, এসি স্লিপারে ৪৬ টি আসন রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রেলওয়ে কর্মকর্তা জানান, রেলওয়ে ইলেকক্ট্রিক বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্তদের অবহেলার কারণে কোচগুলোর এ অবস্থা। এসব এসি কোচ নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে যারা নিয়োজিত আছেন তাঁরা যদি ঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতেন তাহলে এভাবে চারটি কোচ অলস পড়ে থাকত না। সরকারের রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হতো না।
সরেজমিন সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, ওই কোচগুলোর টিকেটের জন্য কাউন্টারে ভীড় করছেন যাত্রীরা। কিন্তু কাউন্টার থেকে ওই কোচগুলোর আসনের বিপরীতে টিকেট বিক্রি করছে না। টিকেট না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন যাত্রীরা।
শাহানাজ পারভীন নামের এক যাত্রী বলেন, আমি ছোট দুই ছেলে-মেয়ে নিয়ে খুলনা যাব। তাই রাতে সীমান্ত ট্রেনের এসি চেয়ার বগির টিকেট করতে এসেছিলাম। কিন্তু কাউন্টার থেকে জানানো হয় বগি খুলে রাখায় এসি চেয়ার কোচের টিকেট বিক্রি হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, এই ট্রেনের কোচগুলোর জানালা খোলে না। এতে করে ভিতরে কোনো বাতাস ঢুকতে পারে না। তাই এই গরমে কিভাবে ছোট ছেলে-মেয়েদের নিয়ে এত দূর পথে যাব তা নিয়ে দুশ্চিন্তার মধ্যে আছি।
সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার ওবায়দুল ইসলাম রতন জানান, চিলাহাটি থেকে খুলনার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া আন্তঃনগর রূপসা ও সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেনের দু’টি করে চারটি এসি কোচের এসি যন্ত্রে ত্রুটি দেখা দেয়। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের লিখিত নির্দেশে তা খুলে রাখা হয়েছে। বিকল্প বগি না দেওয়ায় ওই পথের যাত্রীদের আসন দেওয়া হচ্ছে না। কতদিনে বগি চারটি সংযোজন করা হবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না।
এ নিয়ে মুঠোফোনে কথা হয় রেলওয়ে বিভাগীয় বিদ্যুৎ প্রকৌশলী (পাকশি) রিফাত শাকিলের সাথে। তিনি বলেন, কোচগুলোর এসি যন্ত্র কাজ করছে না। যেতেতু যাত্রীদের এসির সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না তাই কোচগুলো খুলে রাখা হয়েছে। এসি ব্যবস্থাপনা সচল করতে চেষ্টা চালানো হচ্ছে। কিন্তু এর যন্ত্রাংশ পাওয়া যাচ্ছে না বলে কোচগুলো স্টেশনে পড়ে আছে। যন্ত্রাংশ পাওয়া গেলেই সেগুলো মেরামতের জন্য সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় পাঠানো হবে।
সৈয়দপুর এক কলেজ থেকেই ৪৮ জন মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ
নীলফামারীর সৈয়দপুরে এক কলেজ থেকেই এবারে মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেলেন ৪৮ জন শিক্ষার্থী। জেলার আলোচিত সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজের ওই ৪৮ জন শিক্ষার্থী। ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল…