![](https://www.nilphamaribarta.com.bd/wp-content/uploads/2024/11/666.jpg)
গোটা নীলফামারী জেলায় আমনের কাটা-মাড়াই শুরু হয়েছে। প্রায় প্রতিটি কৃষকের ঘরে চলছে নবান্নের উৎসব। ফলে জেলার কৃষক ও ধানকাটা শ্রমিকরা ফুরফুরে মেজাজে রয়েছে। ধানের মাঠে ব্যস্ততায় সে কথাই জানান দিচ্ছে।
কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, নীলফামারী জেলার ডোমার, ডিমলা, জলঢাকা, কিশোরগঞ্জ, সদর ও সৈয়দপুর উপজেলায় চলতি মৌসুমে ১ লাখ ১৩ হাজার ১৭২ হেক্টর জমিতে আমনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে অর্জিত হয়েছে ১লাখ ১৩ হাজার ২১৭ হেক্টর জমিতে। এজন্য উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৮১ মেট্রিক টন।এবছর প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও পোকা-মাকড়ের আক্রমন কম থাকায় আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে।
প্রতিটি উপজেলায় আমন কাটা-মাড়াই পুরোদমে শুরু হয়েছে। আমন ধান কাটার পর দু/একদিন জমিতে রেখেই কৃষকের আঙ্গিনায় পৌছে দিচ্ছেন ধানকাটা শ্রমিকরা। কেউবা পাওয়ার টিলার ও ভ্যানে আমন ধান ঘরে তুলছেন।
জেলার সৈয়দপুর উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের ধানকাটা শ্রমিকের দলনেতা আব্দুল কাদের জানান, প্রতিবিঘা জমির (৬০ শতাংশ) ধান কাটতে আমরা ৬০০০ টাকা কৃষকের কাছ থেকে নিচ্ছি। ১২ জনের দল ধান কেটে কৃষকের বাড়িতে নিয়ে আসছি। গেল বছর এই দাম ছিলো ৪ হাজার টাকা। প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়েছে তাই এবার কাজের মজুরীও বেশি।
সৈয়দপুরের বোতলাগাড়ি ইউনিয়নের জানের পাড়ের কৃষক মহির উদ্দিন জানান, গুটি স্বর্ণা, স্বর্ণা-৫, ব্রীরি-৪৯ জাতসহ আমনের কাটা-মাড়াই শুরু হয়েছে। এবছর ধানের ভালো। ধানকাটা শ্রমিকদের মজুরী পরিশোধে মাড়াই করে ধান বিক্রি করতে হচ্ছে। বর্তমানে প্রতিবস্তা ধান (৭৫ কেজি) বিক্রি হচ্ছে ২২০০ থেকে ২৩০০ টাকায়। তিনি বলেন, গ্রাম এলাকায় এখনো প্রচলিত ধারণা রয়েছে নতুন ধান কেটে নবান্ন না করে নতুন চালের ভাত মুখে তোলেন না। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ সৈয়দপুর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মৃনাল কান্তি দাস বলেন, আমাদের হিন্দু রীতিতে নতুন ধানের চাল থেকে তৈরি নৈবদ্য দেবতাগণ, মাতা- পিতা ও পূর্ব পুরুষদের নামে নিবেদন করে নবান্ন উৎসব পালন করা হয়ে থাকে।
নতুন ধান ঘরে তুলে অনেক কৃষক বাড়িতে শুরু হয়েছে নবান্ন। জামাই ও আত্বীয় কে দাওয়াত করছেন। নতুন পিঠা-পুলি ও পায়েস খাওয়ার জন্য। কেউবা ধান মাড়াই করে হাটে তুলে বিক্রি করছেন। ধান বিক্রি করে পরিশোধ করছেন শ্রমিকের মজুরী। ফলে স্থানীয় হাটগুলো নতুন আমন ধানের বেচাকেনা জমে উঠেছে। পাইকাররা ধান কিনে নিয়ে যাচ্ছেন নিজ এলাকায়।
নীলফামারী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. এস.এম আবু বকর সাইফুল ইসলাম জানান, জেলায় আমন ধান কাটা-মাড়াই শুরু হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ও পোকার আক্রমন এবছর তুলনামূলকভাবে কম থাকায় আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। এ পর্যন্ত জেলায় ৩৮% অর্থাৎ ৪৩ হাজার ২৩১ হেক্টর জমির আমন ধান কাটা-মাড়াই হয়েছে।