রংপুরে শিশু, কিশোর-কিশোরী ও নারী উন্নয়নে সচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রম প্রকল্পের আওতায় এইচপিভি টিকাদান-বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (৯ই নভেম্বর) রংপুর জেলাপ্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ নজরুল ইসলাম। জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের আয়োজনে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন রংপুরের জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় অতিরিক্ত সচিব বলেন, সাধারণ মানুষের মাঝে নতুন কোনো কিছু প্রতিষ্ঠিত করতে অনেক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়। আর স্বাস্থ্য বিষয়ক কোনো কিছু মানুষের মাঝে গ্রহণযোগ্য করে তোলা আরও বেশি চ্যালেঞ্জিং। এক্ষেত্রে মানুষের মধ্যে ভয় কাজ করে। এইচপিভি টিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই টিকা জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে। এই টিকার কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নাই। অনেকে এ সম্পর্কে গুজব ছড়াচ্ছে। কিন্তু এই গুজবের কোনো ভিত্তি নাই। তাই সরকারের পাশাপাশি গণমাধ্যমকে এই টিকা গ্রহণের সূফল সম্পর্কে ব্যাপক প্রচার করতে হবে। তিনি প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিশু ও কিশোরীদের এই টিকা গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে কাজ করার আহ্বান জানান।
আমন্ত্রিত অতিথির বক্তৃতায় রংপুরের সিভিল সার্জন ডা. মোঃ মোস্তফা জামান চৌধুরী বলেন, রংপুর জেলায় এইচপিভি টিকার উদ্দিষ্ট কিশোরীর সংখ্যা ছিল এক লক্ষ ১৪ হাজার ২১২ জন। এ পর্যন্ত ৮৮ হাজার ৮৫৭ জন কিশোরীকে এইচপিভি টিকা প্রদান করা হয়েছে। যারা এখনো এইচপিভি টিকা গ্রহণ করেননি, তাদেরকে টিকা গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। এ জন্য ব্যাপক প্রচারের কোনো বিকল্প নেই। তিনি এইচপিভি টিকা প্রদান কার্যক্রমকে সফল করতে গণমাধ্যমকর্মী-সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করার আহ্বান জানান।
সভাপতির বক্তৃতায় রংপুরের জেলাপ্রশাসক বলেন, এইচপিভি টিকাপ্রদান কর্মসূচি সফল করতে অভিভাবক, শিক্ষক ও কিশোরীদের এইচপিভি টিকা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে অবহিত করতে হবে। জেলাপ্রশাসন ও অন্যান্য সরকারি দপ্তরের অনুষ্ঠানেও এইচপিভি টিকা গ্রহণের বার্তা প্রচার করতে হবে। তিনি রংপুর জেলায় এইচপিভি টিকাপ্রদান কর্মসূচি সফল করতে জেলাপ্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেন।
কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী সাংবাদিকদের কয়েকজন এইচপিভি টিকাপ্রদান সফল করার কৌশল ও করণীয় বিষয়ে তাঁদের মতামত ব্যক্ত করেন। সাংবাদিকগণ জানান, এইচপিভি টিকাপ্রদান কর্মসূচি সফল করতে গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রচার চালানো হবে।
কর্মশালার শুরুতে এইচপিভি টিকাপ্রদান বিষয়ে একটি তথ্যচিত্র উপস্থাপন করেন ইউনিসেফ-এর রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের ফিল্ড অফিসার ডা. বিকাশ চন্দ্র দাস। জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের উপপরিচালক সোহেল পারভেজের সঞ্চালনায় কর্মশালায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মোহাম্মদ গোলাম আজম ও ইউনিসেফের স্যোশাল অ্যান্ড বিহ্যাবিয়ার চেঞ্জ অফিসার মনজুর আহমেদ বক্তব্য প্রদান করেন। কর্মশালায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের রংপুর জেলার দপ্তরসমূহের কর্মকর্তা ও সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।